বরিশাল সংবাদদাতা : বরিশালের অক্সফোর্ড মিশন চার্চ। তবে লাল ইটের তৈরি বলে স্থানীয় মানুষের কাছে ‘লাল গির্জা’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গির্জা এটি। শুধু বাংলাদেশই নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম গির্জা হল এটি। যার চারিদিকে রয়েছে সবুজের সমারোহ। শতবর্ষী এ গির্জার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য এখনও মানুষের আকর্ষণের প্রধান কেন্দ্র।
মূলত উনবিংশ শতকের শেষের দিকে অক্সফোর্ড মিশনারি সংস্থার উদ্যোগে বরিশালে তৈরি হয় এপিফ্যানি চার্চ। পরবর্তীকালে যেটা পরিচিতি পায় অক্সফোর্ড মিশন চার্চ হিসেবে। ১৯০৭ সালে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয় এই গির্জার। অনেক যত্ন নিয়ে নকশা করেছিলেন ফাদার স্ট্রং এবং সিস্টার এডিথ। প্রাঙ্গণ ছেড়ে গির্জার ভেতরে ঢুকলেই বোঝা যাবে সেই যত্ন।
মোট ৪০টি খিলানের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে এই বিশাল গির্জা। মূল প্রার্থনা কক্ষটির উচ্চতা প্রায় ৫০ ফুট! লাল ইট দিয়ে পুরো স্থাপত্যটি তৈরি হলেও, ভেতরের ছাদটি কাঠের তৈরি। মার্বেলের প্রশস্ত মেঝের ওই পাড়ে রয়েছে বড় একটি ক্রশ। বেথেলহেম থেকে নাকি এটি আনা হয়েছিল।
গির্জাটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও এর স্থাপত্যশৈলী বিনষ্ট না হয়। রয়েছে চার্চের বিখ্যাত সেই ঘণ্টা। যা দিনে নিয়মিত সাত বার চার্চেই বেজে ওঠে। যা এশিয়ার সবচে বড় ঘণ্টা।
কথিত আছে, কবি জীবনানন্দ দাশের সঙ্গে তার প্রথম প্রেমিকা মুনিয়ার দেখা মেলে এই গির্জায়। মুনিয়ার মা এই গির্জায় সেবিকার কাজ করতেন। শুধু কি তাই? বরিশালের এই পুরোনো গির্জাটির সঙ্গে জীবনানন্দের সম্পর্কও ছিল নিবিড়। ছাত্রাবস্থায় অক্সফোর্ড মিশনের ছাত্রাবাসে থাকতেন তিনি। ফলে এখানকার ফাদার ও মাদারদের সঙ্গেও ছিল তার ঘনিষ্ঠতা। এই গির্জাটি জীবনানন্দের বাড়ি থেকে সামান্য দূরেই অবস্থিত।
গির্জাটি নির্মাণের ১০০ বছরেরও বেশি সময় পর হলেও আজও এর সৌন্দর্যের কোনও পরিবর্তন ঘটেনি।
Leave a Reply