1. [email protected] : Touhidul islam Robin : Touhidul islam Robin
  2. [email protected] : Mozammel Alam : Mozammel Alam
  3. [email protected] : nakshibarta24 :
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
৪ঠা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় হারিয়ে গেছে গ্রামীণ ঐতিহ্য মাটি আর ছনের ঘর

  • প্রকাশকালঃ শনিবার, ৬ জুন, ২০২০
  • ৩৪৪ জন পড়েছেন

কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার পাড়া ও মহল্লায় ঘর বলে এ মাটির ঘরই এক সময় এ এলাকার জনসাধারণের কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ও ঐতিহ্য ছিল। জেলার ১৭ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পাড়া ও মহল্লায় ঘরগুলো মাটি দ্বারা তৈরি ছিল এখানকার ঐতিহ্য। চারপাশে মাটির দেয়াল, ছাউনিতে ব্যবহার করা হতো খড় বা ছন। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় তা এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। মিলছে কম মাটির ঘর, বাড়ছে দোলানকোঠা ও টিনের তৈরি ঘর।

এ ঘর শীত ও গ্রীষ্ম বা গরম মৌসুমে বেশ আরামদায়ক ছিল। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাসস্থান হিসেবে বেছে নিত এই মাটির ঘরকেই। কিন্তু কালের আবর্তনে দালানকোটা আর অট্টালিকার কাছে হার মানছে এই চিরচেনা মাটির ঘর। তবে মাটির সঙ্গে পাটের আঁশ, প্রয়োজনীয় কংক্রিট, তক্তা ও বাঁশের ফলা ব্যবহার করে দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম মাটির বাড়ি বানানো যায়। এ ক্ষেত্রে মানুষকে মাটির বাড়ির গুণগত মান, বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতন হলেও ভবিষ্যতে টিকে থাকবে না কুমিল্লার অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর। কিন্তু কালের আবর্তনে দালানকোটা আর অট্টালিকার কাছে হার মানছে এই চিরচেনা মাটির ঘর।

কুমিল্লা মহানগরী ও কুমিল্লা সদর উপজেলা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে সবুজ-শ্যামল ছায়াঘেরা গ্রামীণ জীবনের শান্তির নীড় এ মাটির ঘর। বেশিদিন আগের কথা নয়, জেলার ১৭ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এক সময় মানুষের নজর কাড়তো ঐ সুন্দর এ মাটির ঘর। ঝড়, বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি প্রচুর গরম ও তীব্র শীতে বসবাস উপযোগী মাটির ঘর এখন আর নতুন করে তৈরি হচ্ছে না। বরং আগের ঘরগুলো ভেঙে তেরি করছে দালান কিংবা টিনের ঘর। কুমিল্লার ১৭ উপজেলার বিভিন্ন এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, প্রাচীনকাল থেকেই মাটির ঘরের জেলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক প্রচলন ছিল এ অঞ্চলে। এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। ৮-১০ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড় অথবা টিনের ছাউনি দেয়া হতো। মাটির ঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হতো। একটি ঘর তৈরি করতে আমাদের এক মাসের অধিক সময় লাগতো।

এ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের সৌখিন নারী-পুরুষেরা মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে তাদের নিজ বসতঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তুলতেন। এ জেলায় বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী আব্দুস শহীদ, ফজলুল হক, ফেরদৌস মাহমুদ মিঠু, আব্দুর রাজ্জাক, নাসির উদ্দিন, আলহাজ শহিদুল ইসলাম, ইসমাইল পুলিশ, জয়নাল হাজি, মোখলেছ মিয়া, আব্দুল জলিল, আবদুস সোবহান, মামশাদ কবির, মোহাম্মদ হোসেন, সুলতান আহাম্মদ, আব্দুল মালেক, মুক্তল হোসেন, সোনা মিয়া, সিদ্দিক মিয়া, আব্দুল খালেক, বাবুল মিয়াা, আব্দুল রহিম, রমজান আলী, আবু ছায়েদ প্রমূখ জানান, এক সময় কুমিল্লার অঞ্চলে মাটির ঘরে বাস করতে সবায়ই বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতো। তবে বর্ষার সময় মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বেশি। বন্যা অথবা ভূমিকম্প না হলে একটি মাটির ঘর শত বছরেরও বেশি স্থায়ী হয়। মাটির ঘর বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের পরিবর্তনে কুমিল্লার অঞ্চলের অধিকাংশ জনগোষ্ঠী মাটির ঘর ভেঙে অধিক নিরাপত্তা ও স্বল্প জায়গায় অনেক লোকের বসবাসের জন্য ইটের ঘর করছে। ফলে হারাতে বসেছে প্রাকৃতিক উপকরণে তৈরি এই মাটির ঘর। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে কুমিল্লার অঞ্চলের মানুষও এখন ইট আর লোহা-সিমেন্টের পাকা বাড়ি নির্মাণের দিকে ঝুঁকছে।

এ অবস্থায় মাটির ঘর বিলুপ্ত হতে চলেছে। তবে মাটির সঙ্গে পাটের আঁশ, প্রয়োজনীয় কংক্রিট, তক্তা ও বাঁশের ফলা ব্যবহার করে দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম মাটির বাড়ি বানানো যায়। এ ক্ষেত্রে মানুষকে মাটির বাড়ির গুণগত মান ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতন ও আগ্রহী করে তুললে হয়তো ভবিষ্যতে টিকে থাকবে কুমিল্লার অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর।

খবরটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

বিজ্ঞাপন

Laksam Online Shop

first online shop in Laksam

© All rights reserved ©nakshibarta24.com
কারিগরি সহায়তায় বিডি আইটি হোম