নকশী বার্তা ডেস্ক : করোনা উপসর্গ নিয়ে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করাতে আসা এক তরুণের সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে থাকার ছবি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। একই সঙ্গে ভাইরাল হয়েছে তাকে পানি পান করোনা ও মাথায় পানি ঢালার দুটি ছবিও।
ওই তরুণের সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে থাকার ছবিটি তুলেছেন দেশ রূপান্তরের ফটো সাংবাদিক রুবেল রশীদ। আর তাকে রুবেল রশীদের পানি পান করোনা ও মাথায় পানি ঢালার ছবি দুটি তোলেন কালের কণ্ঠের স্পোর্টস ফটো-সাংবাদিক মীর ফরিদ।
সোমবার দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতায় প্রকাশিত সংজ্ঞাহীন তরুণের ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘বড় বোনকে নিয়ে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করতে আসেন বাবুবাজারের চা বিক্রেতা আল আমীন। বোন তাকে রেখে চলে যায়। এরপর আল আমীন সংজ্ঞা হারিয়ে হাসপাতালের বাইরে পড়ে থাকেন।’
এদিকে সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই তিনটি ছবি ভাইরাল হয়। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমালোচনার পাশাপাশি একজন সাংবাদিকদের এমন মানবিক আচরণের ভূয়সী প্রশংসা করেন নেটিজেনরা।
ঘটনার বিষয়ে দেশ রূপান্তরের ফটো সাংবাদিক রুবেল রশীদ বলেন, প্রতিদিনের মতো করোনা পরিস্থিতির ছবি নিতে মুগদা হাসপাতালে যাই। বেলা সোয়া ১১টার দিকে গিয়ে দেখি হাসপাতালের লনে এক তরুণ জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছে।
তিনি বলেন, ‘আমি ক্যামেরায় দুটি ক্লিক করেই দৌড়ে সেখানে যাই। পাশে বসে থাকা একজন বয়স্ক লোকের হাত থেকে পানির বোতল অনেকটা কেড়ে নিয়ে নিই। পরে ছেলেটাকে তুলে ধরে বসিয়ে মাথায় পানি দিই এবং পানি পান করাই।’
এই ফটো সাংবাদিক বলেন, ‘আমি ওই বয়স্ক মানুষকে বলি- আপনারা এখানে আছেন, অথচ ছেলেটাকে একটু পানি দিলেন না। প্রায় একশ’র মতো লোক আশপাশে ছিল; কিন্তু কেউ ছেলেটির দিকে এগিয়ে আসেনি।’
নেটিজেনদের প্রশংসার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘সব কিছু ছাপিয়ে আমি একজন মানুষ। ওই ছেলেটা আমার ভাইও হতে পারতো। দায়িত্ববোধ থেকেই আমি কাজটি করেছি।’
রুবেল রশীদ বলেন, ছেলেটি আমাকে বলেছিলেন তার সঙ্গে তার বোন এসেছিল। কিন্তু দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সেখানে অপেক্ষা করেও তার কোনো দেখা পাইনি।
দুটি ছবি ফেইসবুকে শেয়ার করে তানিয়া ইসলাম তন্বী নামের একজন লিখেছেন, ‘মানুষের ভুলে ভাঙছে পৃথিবী, তবুও মানুষের পাশে দাঁড়ায় মানুষ।’
রবিউল ইসলাম খান মোনা নামে একজন লিখেছেন, ‘ছবিটি দেখে ফটোগ্রাফার সানা ভাইয়ের কথা মনে পড়লো। হাইকোর্টের সামনে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা মারছিল ভদ্রমহিলাকে; সানা ভাই উদ্ধার করছিলেন উনাকে। আজ দেখলাম আরেকজন ফটোগ্রাফারের সাহায্য করার ছবি; খুব ভাল লাগলো। প্রিন্সেস ডায়না মারা যাবার ছবি তোলার কারণে ফটোগ্রাফারের অনেক সমালোচনা হয়েছিল, সেটাও মনে পড়লো আজ।’
Leave a Reply