নকশী বার্তা ডেস্ক : দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আরও ৪১ জনের মৃতু্য হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট মারা গেলেন ২ হাজার ৭০৯ জন। একই সময় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৫৭ জনের। ফলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজার ৫১০ জন হলো। মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাসবিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। অনলাইন ব্রিফিংয়ে হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও ১২ হাজার ১৪৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে পূর্বে জমা কিছু স্যাম্পলসহ মোট ১২ হাজার ৮৯৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১০ লাখ ৫৪ হাজার ৫৫৯টি। সর্বশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নতুন করে ৩ হাজার ৫৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস তথা কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এতে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হলো ২ লাখ ১০ হাজার ৫১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৪১ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৭০৯ জনে। এই শনাক্ত বিবেচনায় এই মৃতু্যহার ১ দশমিক ২৯ শতাংশ। এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন থাকা আরও ১ হাজার ৮৪১ জন গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন জানিয়ে ডা. নাসিমা বলেন, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসা নেওয়া ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৯৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আর শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৪ দশমিক ৮২ শতাংশ। তিনি বলেন, সর্বশেষ মারা যাওয়া ৪১ জনের মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী। এদের মধ্যে ২১ বছরের বেশি বয়সি ১ জন, ত্রিশোর্ধ্ব ২ জন, চলিস্নশোর্ধ্ব ৬ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১২ জন, ষাটোর্ধ্ব ১১ জন, সত্তরোর্ধ্ব ৭ জন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সি ছিলেন ২ জন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জন ঢাকা বিভাগের, ১৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫ জন খুলনা বিভাগের এবং ১ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩১ জন এবং বাড়িতে মৃতু্য হয়েছে ১০ জনের। সোমবারের তথ্য এদিকে সোমবারের হেলথ বুলেটিনে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় ৫০ জনের মৃতু্যর কথা বলা হয়েছিল। সে সময় ১৩ হাজার ৩৬২টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৯২৮ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার কথা বলা হয়। সে হিসাবে পূর্বের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা কমলেও শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃতু্যর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের ও সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ৪ হাজার ১৯ জনের। বুলেটিনে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭১০ জনকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ৪৩ হাজার ৬৮০ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ৬৫১ জন এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৬৭১ জন। ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ২২ জনকে এবং এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৫০৩ জনকে। এছাড়াও ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে মুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৭৫ জন এবং এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৪২৪ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৯ হাজার ৭৯ জন। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মহানগরীর সাধারণ শয্যায় ভর্তি আছেন ২ হাজার ২১২ জন এবং আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১৬৮ জন। চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ শয্যায় ভর্তি আছেন ২৯০ জন এবং আইসিইউতে ভর্তি আছেন ২২ জন। সারাদেশের অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যায় ভর্তি আছেন ১ হাজার ৭৫৯ জন এবং আইসিইউতে আছেন ৯২ জন। সারাদেশে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৫ হাজার ৪৬৮টি। রোগী ভর্তি আছেন ৪ হাজার ২৬১ জন। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা ৫১১টি, রোগী ভর্তি আছেন ২৮২ জন। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ২৩৩টি, হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা ২৭৭টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের সংখ্যা ১১০টি। প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান প্রদেশে প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়া ভাইরাসটি ক্রমান্বয়ে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে মহামারি ঘোষণা করে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি সাড়ে ৪৮ লাখের বেশি। আক্রান্তদের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৬ লাখ ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে সারাবিশ্বে ৮৯ লাখ ১২ হাজারের মতো রোগী সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। দেশে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২ হাজার ৭০৯ জন।
Leave a Reply