নিজস্ব প্রতিনিধি : কুমিল্লার লাকসামের প্রসূতির একে একে জন্ম নেয়া ৫ নবজাতকের চিকিৎসায় ধারদেনা করে তিন লাখ খরচ করেও শেষ পর্যন্ত একজনকেও বাঁচানো যায়নি। তাদের মৃত্যুতে মিজান ও শারমিন দম্পতি এবং পরিবারের সদস্যরা ব্যথিত।
জানা যায়, ২০১৮ সালে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার পোলাইয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের সাথে পাশ্ববর্তী নাঙ্গলকোট উপজেলার তুগুরিয়ার শারমিন আক্তারের বিয়ে হয়। সুখী দাম্পত্য জীবনে ২০১৯ সালের ৫ মে প্রথম পুত্র সন্তান লাভ করলেও তা মৃত ভূমিষ্ট হয়। গত ১২ আগস্ট তাদের কোলজুড়ে ৫ সন্তান জন্মগ্রহণ করে। লাকসাম জেনারেল হাসপাতালে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার ছাড়াই একে একে ৫ সন্তানের জন্ম দেন শারমিন। তাদের মধ্যে তিনটি ছেলে ও দুইটি মেয়ে। একসাথে ৫ সন্তান জীবিত জন্মগ্রহণ করায় মিজান-শারমিন দম্পতি আশার আলো দেখেন।
কিন্তু জন্মের পর নবজাতকদ্বয়ের ওজন কম হওয়ায় চিকিৎসার উদ্দেশে কুমিল্লায় রওয়ানা হলে অক্সিজেনের অভাবে পথিমধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে মারা যায়। অপর তিনটিকে কুমিল্লা মডার্ন হাসপাতালের বেবি-ইনকিউবেটরে রাখা হয়। ব্যয়বহুল চিকিৎসা হওয়ায় ১৫ আগস্ট দুপুরে তাদের ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সিট সঙ্কটের কারণে ভর্তি করাতে না পেরে ধানমন্ডির উইমেন্স অ্যান্ড চিলড্রেন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালের ইনকিউবেটরে তিন নবজাতককে ভর্তি করা হলেও রবিবার (১৬ আগস্ট) রাতে আরও এক ছেলে মারা যায়। কয়েকদিন সেখানে চিকিৎসার পর আর্থিক সঙ্কটের কারণে শেষ পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই শিশুকে বেবি ইনকিউবিটরে দেয়া হয়। কয়েকদিন চিকিৎসা চলার পর একদিনের ব্যবধানে অন্য ২ নবজাতকও মৃত্যুবরণ করেন।
মিজানুর রহমান জানান, মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে সামান্য যা উপার্জন করি তা দিয়ে কোনরকমে সংসার চলে। আমার স্ত্রীর একে একে ৫ সন্তান জন্ম নেয়ায় আমরা পরিবারের সদস্যরা খুবই আনন্দিত হই। আদরের সন্তানদের বাঁচাতে ধারদেনা করে ৩ লাখ টাকা চিকিৎসায় ব্যয় করেও একটি সন্তানকেও বাঁচাতে পারিনি। তাদেরকে হারিয়ে আমার পরিবার-পরিজন খুবই ব্যথিত। এ শোক কিভাবে সহ্য করবো জানিনা।
Leave a Reply