লাকসাম প্রতিনিধি :
লাকসামে মাকে নির্যাতনের দায়ে ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মা। ঘটনাটি ঘটেছে, লাকসাম পৌর শহরের উত্তর বাজারে। অভিযুক্ত সন্তান আবুল খায়ের উত্তর বাজারের খাজা নেছারিয়া হোটেলের পরিচালক। ভুক্তভোগী মা একই গ্রামের মৃত সেলিম মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া বেগম।
অভিযোগে জানা যায়, খাজা নেছারিয়া হোটেলের জায়গা নিয়ে অভিযুক্ত আবুল খায়েরের সাথে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরোধ চলে আসছিল। গত ৮/৯ বছর এ বিষয়ে আবুল খায়েরের সাথে প্রায়ই মা ও ভাই-বোনদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ হতো। গত ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় হোটেলে গিয়ে মা সুফিয়া বেগম বিরোধ মিটিয়ে ফেলার জন্য ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ছেলে আবুল খায়ের ক্ষিপ্ত হয়ে মাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে তার ডাক-চিৎকার শুনে অপর ছেলে আবদুল আউয়াল রুবেল, মেয়ে স্বপ্না এগিয়ে এলে তাদেরকে মারধর করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে লাকসাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়।
এ ঘটনায় পরবর্তিতে অভিযুক্ত আবুল খায়েরের বড় ভাই মোঃ আবুল কালাম মা-বোন ও ছোট ভাইকে মারধরের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে আবুল খায়ের ক্ষিপ্ত হয়ে হয়রানির উদ্দেশ্যে বড় ভাই-ছোট ভাইসহ পরিবারের ৩ সদস্যকে আসামি করে চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অলিক অভিযোগে কুমিল্লার আদালতে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করে।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, পারিবারিক সিদ্ধান্তে নেছারিয়া হোটেলটি ভাড়া নিয়ে আবুল খায়ের পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু আবুল খায়ের ছল-চাতুরি করে হোটেলের জায়গাটি অন্যান্য ভাইদের বাদ দিয়ে নিজের নামে দলিল করে নেয়। এমনকি হোটেলের গ্যাস লাইন, ট্রেড লাইসেন্সও তার করে নেয়। পরে অন্য ভাইদের আপত্তিতে হোটেলের লাইসেন্স নবায়ন স্থগিত করে পৌর কর্তৃপক্ষ। হোটেলের মালিকানার বিষয়টি সুরাহার জন্য বিভিন্ন মহলে কয়েকদফা দেন-দরবারের আয়োজন করলেও আবুল খায়ের বার বার সকলকে এড়িয়ে যাওয়া বিরোধ মিমাংসা করা যায়নি।
ভুক্তভোগী মা সুফিয়া বেগম বলেন, আমার মেঝো ছেলে আবুল খায়ের অপর দু’ভাইসহ পরিবারের সদস্যদের ঠকিয়ে জোরজুলুম করে নেছারিয়া হোটেল একাই ভোগ করছে। কিন্তু পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে ৩ ভাই মিলে টাকা দিলেও কৌশলে আবুল খায়ের একাই নিজের নামে দলিল করে নেয়। এ পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে সে আমাকে কয়েকবার মারধরসহ মানসিক ও শারিরিকভাবে নির্যাতন করেছে। লোকলজ্জায় এতোদিন কাউকে এগুলো বলিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবুল খায়ের জানান, আমি কাউকে মারধর করিনি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়।
লাকসাম থানার ওসি মোঃ নিজাম উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। খবর নিয়ে জেনেছি, নেছারিয়া হোটেলের মালিকানা নিয়ে পারিবারিকভাবে ভাই-বোনদের মাঝে দ্বন্দ্ব আছে। বিষয়টি মিমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে আদালতের স্মরানাপন্ন হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply