নকশী বার্তা ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন দফতর বা সংস্থাসমূহ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের টেলিফোন নং- ৯৫৭৩৬২৫।
বুধবার (২০ মে) মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত জেলাসমূহে ইতিমধ্যে বিশুদ্ধ পানীয় প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম ভাণ্ডার বিভাগে ১৫টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং ১০ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ করেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর থেকে ঢাকায় এবং প্রতিটি জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে-
>> সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি জেলায় ২ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট প্রেরণ করা হয়েছে। সম্ভাব্য আক্রান্ত প্রতিটি বিভাগের স্টোরে ১০ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রাখা হয়েছে।
> প্রতিটি জেলায় প্রতি ঘণ্টায় ২ হাজার লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন ৩টি মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পাঠানো হয়েছে।
>> ১০লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন পাঁচ হাজার জেরিকেন প্রতিটি জেলায় পাঠানো হয়েছে।
>> প্রতিটি জেলায় জন্য ৫০০টি করে হাইজিন কিট পাঠানো হয়েছে।
>> প্রতিটি জেলায় একটি করে ওয়াটার ক্যারিয়ার পাঠানো হয়েছে।
>> প্রতিটি জেলায় নলকূপ মেরামতের প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা হয়েছে।
>> প্রতিটি জেলায় সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ব্লিচিং পাউডার পাঠানো হয়েছে।
>> প্রতিটি জেলায় এক হাজার নতুন নলকূপ স্থাপনের জন্য মালামাল পাঠানো হয়েছে।
>> প্রতিটি জেলায় ৫০০টি অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণের মালামাল পাঠানো হয়েছে।
>> প্রতিটি জেলায় দুই হাজার নলকূপ জীবাণুমুক্তকরণের মালামাল পাঠানো হয়েছে।
>> প্রতিটি জেলায় দুই হাজার নলকূপ উঁচুকরণের মালামাল পাঠানো হয়েছে।
>> পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে প্রতি জেলায় অতিরিক্ত নলকূপ মেকানিক প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) দুর্যোগকালীন সময়ে দেশব্যাপী পল্লি সড়ক নেটওয়ার্ক নিরাপদ ও নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে উপকূলীয় জেলাসমূহে কর্মরত এলজিইডির সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদেরকে দুর্যোগকালীন অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এবং কোভিড-১৯ এর কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন সময়ে স্ব-স্ব কর্মস্থলে অবস্থান করে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছারা যেসকল উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়-
>> দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয়কেন্দ্রসমূহে/নিরাপদ স্থানে দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছানোর জন্য আশ্রয়কেন্দ্র সংযোগকারী সড়কসহ দেশব্যাপী পল্লিসড়ক নেটওয়ার্ক সচল ও নিরবিচ্ছিন্ন রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
>> উপজেলা/ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে এলজিইডির আওতায় নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি, সৌর বিদ্যুৎ ও পয়ঃব্যবস্থাপনা সচল রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
>> ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকায় অবস্থিত রাস্তাসমূহ জলোচ্ছ্বাসের পানিতে দীর্ঘদিন নিমজ্জিত থাকায় রাস্তার বিভিন্ন স্তর নরম হয়ে যায়। উক্ত অবস্থায় রাস্তার প্রবেশ পথে ভারী যানবাহন প্রবেশ রোধকল্পে, প্রতিবন্ধকতা (যেমন- খুঁটি পুঁতে রাখা, সাইনবোর্ড স্থাপন ইত্যাদি) তৈরির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
>> সড়কের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনে সকল যানবাহন চালু অবস্থায় (ট্রাক, পিক-আপ ইত্যাদি) ড্রাইভারসহ কর্মস্থলে রাখা হয়েছে।
>> প্রয়োজনীয় নির্মাণ যন্ত্রপাতি যেমন- বুলডোজার, এস্কাভেটর ইত্যাদি চালু অবস্থায় রাখতে হবে এবং ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ কাটার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি রাখা হয়েছে।
>> সদর দফতরে পিএমই ইউনিটে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পিএমই/পরিকল্পনা/রক্ষণাবেক্ষণ) (মোবাইল নম্বর-০১৭৩২-৬০২৫৪০/০১৭১২-৫৩১৪৩৪/০১৭১১-০০৭৭৬৫) এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে।
>> জলোচ্ছ্বাস/বর্ষার আপদকালীন সময় রাস্তার যেকোনো জায়গায় বা অংশে যেকোনো সময় ক্ষতিগ্রস্ত বা ভেঙে গেলে এলজিইডির পল্লি সড়ক ও কালভার্ট মেরামত কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকাতে আপদকালীন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে।
Leave a Reply