1. [email protected] : Touhidul islam Robin : Touhidul islam Robin
  2. [email protected] : Mozammel Alam : Mozammel Alam
  3. [email protected] : nakshibarta24 :
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ১০:১২ অপরাহ্ন
৯ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযুদ্ধ জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই

  • প্রকাশকালঃ রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২১৮ জন পড়েছেন

 শাহ শরীফ  : এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বিশ্বের মানচিত্রে লেখা হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের নাম। যাদের আত্মত্যাগে ও আত্মদানের বিনিময়ে লাল-সবুজের এ পতাকা, স্বাধীন-সার্বভৌম এ বাংলাদেশ- তাদের সঠিক ইতিহাস আমাদের সবার জানা দরকার। মুক্তিযুদ্ধে আলেমদের অবদান জানতে চেয়েছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয়কর্মী মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদীর কাছে।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বাবা! মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পর আমার জীবনের শেষ লগ্নে তুমি এসেছ মুক্তিযুদ্ধে আলেমদের অবদান জানতে। বিষয়টি খুব জরুরি- এগুলো রেকর্ড হওয়া দরকার। মুক্তিযুদ্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে ছিল না। এটি ছিল জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধ যদি ইসলামের বিরুদ্ধে হতো তাহলে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কোরআন তেলাওয়াত হতো না।

বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করতেন না। মুক্তিযুদ্ধে আলেমদের অনেক অবদান ছিল। অবশ্য জামায়াতে ইসলামী ও নিজামে ইসলাম পার্টি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় আলেম হয়ে আমরা যারা স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছি তাদের জীবনের ঝুঁকি ছিল সবচেয়ে বেশি।

তাই আমি মনে করি আলেমদের যথাযথ মূল্যায়ন হওয়া দরকার। যারা স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন তাদের প্রবাদ পুরুষ হলেন, মাওলানা অলিউর রহমান। উলামা পার্টি নাম দিয়ে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। ১৪ ডিসেম্বর রাতে তাকে হত্যা করা হয়েছে। বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করা হল অথচ এখনও অনেকেই তার নামই জানেন না।

পাকিস্তান হয়েছিল ইসলামের নাম দিয়ে। জিন্নাহ সাহেব কোরআন দেখিয়ে দু’শতবার বলেছিলেন, পাকিস্তানকা মতলব- ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। আসলে সবই ধোঁকা ছিল। ১৯৬৮ সালে আমার একটি বই প্রকাশিত হয় ‘নিমজ্জমান পাকিস্তান’।

সেখানে আমি বলেছিলাম, পাকিস্তান থাকবে না কারণ যেখানে বৈষম্য আর ধোঁকা থাকে সে রাষ্ট্র টিকে না। তখন এ কথা লেখা মারাত্মক সাহসের ব্যাপার ছিল। আইয়ুব খানকে লৌহমানব বলা হতো।

আমার এক বড় ভাই, মাওলানা মুজিবুর রহমান আমাকে বলেছিলেন- ‘এই বই লেখার কারণে পাক-সরকার আপনার হাত-পা ভেঙে দেবে। জামায়াতে ইসলামের বিরুদ্ধে লেখার জন্য আমার ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। আমি তখন আমার ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ওবাইদুল্লাহ বিন সাইদকে নিয়ে ডাউকি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের শিলংয়ে চলে যাই। সেখানে পাইন-উড হোটেলে আমাদের রাখা হল। আমরা মনে করলাম, এখানে আমরা ভারত সরকারকে যুদ্ধের অবস্থা জানাতে পারব। সেখানের মুসলমানদের সঙ্গে আমাদের মিশতে দেয়া হতো না।

ভারতের মুসলমানরাও চাইতেন না পাকিস্তান আলাদা হোক। আমরা হোটেলে খেতে গেলে তারা বলতেন- ‘জয় বাংলাকা আদমি হ্যাঁ? জয় হিন্দকে হোটেল মে যায়্যা।’ জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দ নেতা মাওলানা আসাদ মাদানি বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কলকাতা ও দিল্লিতে মিছিল করেন। সীমান্তে আশ্রয়শিবির স্থাপন করে অসংখ্য ঘরবাড়ি ছাড়া বাংলাদেশিদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেন।

মাওলানা জালালাবাদী বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুকে এ কথা বোঝাতে পেরেছিলাম, বাংলার হাজার হাজার আলেম আপনার পক্ষে আছে তা না হলে আপনি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নির্বাচনে জয়ী হতে পারতেন না।

বঙ্গবন্ধু আমার যুক্তি বিশ্বাস করেছিলেন। আলেমদের মধ্যে মাওলানা এমদাদুল হক আড়াইহাজারী, মাওলানা মোস্তফা আজাদ, মাওলানা হাবিবুর রহমানসহ আরও বহু আলেম সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। আমাদের মুক্তির সংগ্রামে আলেম সমাজ যে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

লেখক : প্রাবন্ধিক

খবরটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

বিজ্ঞাপন

Laksam Online Shop

first online shop in Laksam

© All rights reserved ©nakshibarta24.com
কারিগরি সহায়তায় বিডি আইটি হোম