মন্ত্রীর নির্দেশক্রমে লাকসাম পৌর এলাকায় ডাকাতিয়া নদী পুনঃখননের কাজ পরিদর্শন করেন পৌর মেয়র অধ্যাপক মোঃ আবুল খায়ের। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সাইফুল আলম ও কান্দিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওমর ফারুকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
মোজাম্মেল হক আলম, লাকসাম :
দীর্ঘদিন ধরে দখল-দূষণে বিপন্নপ্রায় ঐতিহ্যের ডাকাতিয়া নদী পুনঃখননে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। একসময় এ নদীর বুক ছিঁড়ে দূর দূরান্তে পাল তোলা নৌকা চলতে দেখা যেতো। সে সময় দক্ষিণ কুমিল্লাসহ চাঁদপুরের বেশ কয়েকটি উপজেলার মানুষের কাছে ‘ডাকাতিয়া নদী’ ছিল প্রাণের স্পন্দন। মেঘনার এ উপ-নদীটি মেঘনার মতোই উত্তাল ছিল। ফলে ডাকাতিয়ার করাল গ্রাসে নদীর দুই পাড়ের মানুষ সর্বস্ব হারাত। জীবন বাঁচাতে ডাকাতিয়া পাড়ি দিতে গিয়ে বহু মানুষের সলিলসমাধি হয়েছে। ডাকাতের মতো সর্বগ্রাসী ছিলো বলে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘ডাকাতিয়া নদী’।
এক সময় বাণিজ্যের শহর খ্যাত লাকসামে লঞ্চ ও মালবাহী ট্রলারের মূল রুট ছিলো ‘ডাকাতিয়া নদী’। সে সময় শুষ্ক মৌসুমে কৃষকরা ফসল আবাদকালে এ নদী থেকে পেত পর্যাপ্ত পানি। নদীতে ছিল দেশীয় মাছের প্রাচুর্য। ডাকাতিয়া নদী ছিল এ অঞ্চলের বহু মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস। দক্ষিণ কুমিল্লাসহ চাঁদপুরের মানুষের কাছে ডাকাতিয়া নদী আশীর্বাদ হলেও সময়ের ব্যবধানে তা দখল-দূষণের কবলে অভিশাপে রূপান্তরিত হয়েছিলো।
গত বছর বিপন্নপ্রায় ডাকাতিয়াকে পুরুজ্জীবিত করতে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম। মন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ডাকাতিয়া পুনঃখননের কাজ শুরু হয়েছে। গতকাল মন্ত্রীর নির্দেশক্রমে লাকসাম পৌর এলাকায় ডাকাতিয়া নদী পুনঃখননের কাজ পরিদর্শন করেন পৌর মেয়র অধ্যাপক মোঃ আবুল খায়ের। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সাইফুল আলম ও কান্দিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওমর ফারুকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে লাকসাম পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক মোঃ আবুল খায়ের বলেন, ‘গত বছর মাননীয় এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বিপন্নপ্রায় ডাকাতিয়াকে সম্পূর্ণরূপে পুরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেন। পাশাপাশি তিনি লাকসাম পৌরসভার মধ্যে প্রবাহিত ডাকাতিয়া নদীর অংশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, নদী খনন, ওয়াকওয়ে, লাইটিংসহ ডাকাতিয়া নদীকে দৃষ্টিনন্দন করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভাকে নির্দেশনা প্রদান করেন। মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ মেগা প্রজেক্টের কাজ চলছে। আমরা আশা করি, দ্রুত প্রক্রিয়ায় ডাকাতিয়ার খনন কাজ শেষ হবে এবং লাকসাম সহ বৃহত্তর কুমিল্লার মানুষ এর সুফল ভোগ করবেন।’
Leave a Reply