কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লা শহরের সবচেয়ে বেশি এলাকায় একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যা ৩৬ জনের করোনা সংক্রমণ সনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন চিকিৎসকও রয়েছেন। দুই পরিবারের ৬ জন করে ১২ জন আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। মাত্র এক বছর বয়সী এক শিশু আক্রান্ত আছেন এদের মধ্যে। কুমিল্লা জেলা আজ (৩১ মে) সর্বোচ্চ ১০৪ জনের করোনা সংক্রমণ সনাক্ত হয়েছে যার বেশির ভাগই কুমিল্লা শহরের। এ নিয়ে কুমিল্লা জেলায় ৯৭৫ জনের করোনা সংক্রমণ সনাক্ত হলো। কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, কুমিল্লা শহরের ঝাউতলা ও লাকসাম রোড দক্ষিণ চর্থা মাদ্রাসা গলির দুই পরিবারের ৬ জন করে ১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। এর মধ্যে শহরের লাকসাম রোডের মাদ্রাসা গলির বাসিন্দা কাশেমুল উলুম মাদ্রাসার এক শিক্ষকের মাসহ পরিবারের ৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। তিনি টমসনব্রিজ কবরস্থানেও দায়িত্বে আছেন। শহরের তালপুকুর পাড়ের এক নারী ও একই এলাকায় বসবাসকারী এ নিউরো সার্জন, রেইসকোর্স কাঠেরপুল এলাকায় বসবাসকারী ডেলটা ফার্মার এরিয়ার ম্যানেজার এক বছরের কন্যা শিশু, স্ত্রীসহ আক্রান্ত হয়েছেন। ডেল্টার এরিয়া ম্যানেজারের ৭ বছরের আরেক সন্তানের নমুনার ফল নেগেটিভ এসেছে। শহরের জিলা স্কুল রোডের একজন ও নুরপুরের দুইজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকুরিরত ৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজন ছোটরায়, একজন টমসনব্রিজে আরেকজন বালুরচরে বসাবাস করেন। শহরের ঝাউতলাস্থ শেল টাওয়ারের আরেক চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুইজন। শহরের কান্দিরপাড়ের একজন, গোলাম মোস্তফা সড়কের একজন চিকিৎসক, হযরতপাড়ার একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কুমিল্লা সিএমএইচের কোয়াটারের দুইজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
কুমিল্লা সদর উপজেলার বারপাড়া ও চম্পকনগর হালিমানগরের একজন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তিন চিকিৎসক, দুই নার্স ও ৬ রোগীর করোনা সংক্রমণ সনাক্ত হয়েছে। রোগীদের একজনের বাড়ি শহরের বজ্রপুরের, আরেকজনের বাড়ি শহরের কুচাইতলীতে। এরা আগেই বাড়ি চলে গেছেন।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসাধীন নাজিরা বাজারের আবুল কাশেম (৪০) সকালে মারা গেছেন। তার করোনার লক্ষণ উপসর্গ ছিলো। তিনি নমুনা পরীক্ষা করে ভালো অনুভব করা বাড়ি চলে যেতে চাওয়ার ১০ মিনিট পরই মারা যান। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। সেখানেই তাকে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান।
অপর দিকে ৩০ মে রাত সাড়ে ৮টায় করোনার লক্ষণ উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন কুমিল্লা সার্কিট হাউসের কর্মচারী রেজাউল করিম। তিনি শহরের লাকসাম রোডের মডার্ণ হাসপাতালের কাছে থাকতেন। সকাল ৭টায় বুড়িচংয়ের বাকশিমুল গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, কুমিল্লা শহরের সরকারি মহিলা কলেজ গেইটের বাসিন্দা, মহানগর যুবদল নেতা মমিন আহমেদ রনির মা আখতার জাহান জোৎস্না (৬২) কুমিল্লার ফোরটিস হাসপাতালে সকাল ৭টায় মারা গেছেন। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন । শনিবার সন্ধ্যায় তাকে ঐ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। হাসপাতালের সুপারেন্ডেন্ট ডা. রাসেল আহমেদ চৌধুরী তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু জানান, দুপুর ১১টার দিকে তাদের সংগঠন বিবেক এর সদস্যরা ফোরটিস থেকে মরদেহ গ্রহণ করে বেলা ১২ টার দিকে কুমিল্লা শহরের টমসনব্রিজ কবরস্থানে দাফন করেন।
এ দিকে কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বারে ২১ জন, লাকসামে ১৭ জন, নাঙ্গলকোটে ৯ জন, চৌদ্দগ্রামে ৬ জন, মনোহরগঞ্জে ৪জন, বরুড়াতে ৪ জন, হোমনায় ৩জন, মেঘনাতে ১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কুমিল্লার দেবীদ্বারে সর্বোচ্চ ২০ জন আজ (৩১ মে) সুস্থ হয়েছেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে সুস্থ হয়েছেন ৪ জন। কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন একজন।
Leave a Reply