1. [email protected] : Touhidul islam Robin : Touhidul islam Robin
  2. [email protected] : Mozammel Alam : Mozammel Alam
  3. [email protected] : nakshibarta24 :
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন
১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাব্যতা হারিয়ে ডাকাতিয়া নদী এখন মরাখাল

  • প্রকাশকালঃ সোমবার, ১১ মার্চ, ২০২৪
  • ১৮২ জন পড়েছেন

মোজাম্মেল হক আলম :
মানচিত্র থেকে হারাতে বসেছে ডাকাতিয়া নদী। নদীর কোল থেকে বালু ব্যবসা বন্ধ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ আর খনন না করলে অচিরেই হারিয়ে যাবে ডাকাতিয়া নদী। এটাই এখন ডাকতিয়ার বাস্তব চিত্র। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ডাকাতিয়া নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড থেকে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লার বাগমারা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যা পরবর্তীতে লাকসাম, চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি কুমিল্লা-লাকসাম চাঁদপুর জেলার বুক ছিড়ে চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে মিশেছে। দখল, দুষণ আর নাব্যতা হারিয়ে লাকসাম অঞ্চলের ডাকাতিয়া নদীর বেশ কিছু অংশ আজ বিভিন্নভাবে মরে যেতে বসেছে।
ডাকাতিয়া নদী এখন মরাখালে রূপান্তরিত, হুমকির মুখেও পড়েছে ইরি ফসল। ইরি আবাদ মৌসুমের শুরুতেই ডাকাতিয়া নদী পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে সেচ সংকটে চলতি মওসুমে নদীর তীরবর্তী কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার একর জমির ইরি ফসল হুমকির মুখে। ডাকাতিয়া নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় সদর দক্ষিণ, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, শাহরাস্তি, হাজীগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার একর জমির ইরি ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকায় কৃষকদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
জলাঞ্চল খ্যাত মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার একর ফসলি জমি বছরের প্রায় ৯ মাস পানিতে ডুবে অনাবাধি থাকে। একমাত্র ইরি ফসল নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা শংকিত। লাকসাম উপজেলার ইছাপুরা, সাতঘর, সিংজোড়, কালিয়াপুর, শ্রীয়াং, হামিরাবাগ মনোহরগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর, চাটিতলা, সমেসপুর, হাজীপুরা, নিশ্চিন্তপুর, গজরাপাড়া, বড়কেশতলা, ধীকচাঁন্দা, হাড়িয়া হোসেনপুর, আমতলী, শ্রীপুর, বসৈয়া, তালতলা, মৈশাতুয়া, চিকুটিয়া, গন্ডামারা, ডুমুরিয়া, হাটিরপাড়, ঝলম, বচইড়, ভাটগাঁও, লাউলহরীসহ নদী তীরবর্তী গ্রামের হাজার হাজার কৃষি নির্ভর পরিবার বছরে মাত্র একটি ইরি ফসলের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমানে ডাকাতিয়া নদী শুকিয়ে যাওয়া ধরায় এতদাঞ্চলের কৃষকের মুখের হাসি বিলীন হয়ে তাদের মাঝে হাহাকার বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক কৃষক আশা, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন এনজিও এবং মাল্টিপারপাস হতে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে বর্গা জমিন চাষ করেন। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বর্গা চাষিরা দিন যাপন করছেন অনিশ্চয়তার মাঝে। ডাকাতিয়া নদী খননের দাবী নতুন নয়। এরশাদ প্রেসিডেন্ট থাকাবস্থায় মনোহরগঞ্জ সফরকালে এ দাবি উত্থাপিত হয়েছিল। পরবর্তী সরকার লৎসর-দাড়াচোঁ খাল খনন উদ্বোধনকালে এ দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে চিতোষী-পোমগাঁও স্থানে রেগুলেটর পাম্প স্থাপনের মাধ্যমে পানির ব্যবস্থা করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ঘোষণা দেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীণ তৎকালীণ মন্ত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান মনোহরগঞ্জ সফরকালে এক জনসভায় ডাকাতিয়া নদী খননসহ পানি সমস্যার সমাধানের ঘোষণা করেন।
বর্তমানে হতদরিদ্র অসহায় কৃষককুল প্রতিশ্রুতি বাদ দিয়ে বাস্তব সমাধান চায়, কৃষক ও কৃষি বাঁচাতে দখল, দুষণ ও নাব্যতা রোধে ডাকাতিয়া নদী খনন কিংবা বিকল্প পানির ব্যবস্থা আজ গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার বিপুল পরিমাণ সার, বীজ সরবরাহ করে সার ও বীজ সংকট সমস্যার সমাধানে প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু পানি না থাকলে শুধু সার ও বীজ দিয়ে ফসল উৎপাদন সম্ভব নয়। পানির অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়াটা স্বাভাবিক।
এ অঞ্চলের কৃষক ও কৃষিকে বাঁচাতে এরশাদ থেকে শুরু করে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের সফল স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডাকাতিয়া নদীতে পানির ব্যবস্থা করে কৃষকের হতাশা দূর করবেন বলে এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রত্যাশা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালি উজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে নতুন করে ডাকাতিয়ার ১২ কিলোমিটার খনন করা হয়েছে। লাকসাম-মনোহরগঞ্জ অংশে খনন করার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। চলতি বছরেই কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএর সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান করা হব।

 

 

খবরটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

বিজ্ঞাপন

Laksam Online Shop

first online shop in Laksam

© All rights reserved ©nakshibarta24.com
কারিগরি সহায়তায় বিডি আইটি হোম