ইসমাইল নয়ন :
ব্রাহ্মণপাড়ায় কৃষকদের সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়। করোনা আতঙ্কের কারণে অলস সময় কাটানো কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে তুলে দিয়েছেন বিভিন্ন জাতের সবজির বীজ। বিনামূল্যে বীজ পেয়ে নানা প্রকার সবজি উৎপাদনে উৎসাহিত হচ্ছে কৃষকরা। পারিবারিক খাদ্য চাহিদা মেটাতে বাড়ির আঙ্গিনায় এই বীজ বপন করে অর্থনৈতিক সাবলম্বীও হয়েছেন অনেক কৃষক। এতে একদিকে যেমন পতিত জমির ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে, অপরদিকে বিশ্ব মহামারি করনোর সময়ে এ উপজেলায় সবজির ঘাটতি দূর হচ্ছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির সময়ে চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপশি বিনামূল্যে লাল শাক, পুঁইশাক, মিস্টি কুমড়া, লাউ, ঢেঁড়স, চাল কুমড়া, দুনধুল, চিচিংগা, কলমিশাক ও শশার বীজ কৃষকদের মাঝে পৌছে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এসব বীজ থেকে ফলানো সবজি এখন কৃষকদের পারিবারিক খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে কৃষকরা বাজারেও বিক্রয় কতে পারছেন।
বাড়ির আঙ্গিনায় সবজিচাষী উপজেলার দুলালপুর গ্রামের কৃষক এনামুল ভূইয়া জানান, তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গনের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ১০ শতক পরিত্যাক্ত জায়গায় পাটশাক, ডাটা, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, চিচিংগা, বেগুন, পুইশাক, দুনধুল সহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেছেন। এর মধ্যে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যলয় থেকে অধিকাংশ বীজ তাকে বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছিলো। আঙ্গিনায় সবজি চাষ করে তিনি সফল। তিনি জানান, তার চাষকৃত সবজি বাগান থেকে উৎপাদিত সবজি দিয়ে তার পারিবারিক চাহিদা মিটি তিনি অনেক সবজি বাজারে বিক্রয় করছেন। তিনি আরো জানান, এলাকার অনেকে পরিবারের কাচা তরকারির চাহিদা মেটাতে তার বাগান থেকে এসে সবজি কিনে নিয়ে যান। এত তার একদিকে যেমন পারিবারিক সবজির চাহিদা মিটছে অন্যদিকে তার অর্থনৈতিক আয়ও হচ্ছে বলে জানা তিনি।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মাহাবুবুল হাসান বলেন, ‘কৃষিেেত্র করোনা ভাইরাস আতঙ্কের কোন প্রভাব যাতে না পড়ে, সে জন্য চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপশি কৃষকরা যাতে অলস সময় পার না করে, সে জন্য তাদের কৃষি কাজে বিভিন্ন ভাবে উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করছি আমরা। করোনা ভাইরাসে যেন কৃষকের খাদ্য সংকট না হয় সে জন্য সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন সবজির বীজ বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকরা তাদের বসত বাড়ির আঙ্গিনায় এসব সবজির বীজ বপন করে যে সবজি উৎপাদন হয়েছে তা কৃষকদের পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে তারা অনেকেই বাজারজাত করে অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হচ্ছে। এতে কৃষকরা নিজেদের চাষকৃত সবজি দিয়ে এই উপজেলায় অনেকটাই সবজির চাহিদা মিটাতে পেরেছে বলেও মনে করেন তিনি। তিনি জানান, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় কৃষিদের পাশে থেকে তারা বিরামহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং তাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply