কুমিল্লা প্রতিনিধি : মহামারী করোনার করাতলে সারাবিশ্ব। আজ মানুষ ঘরবন্দী আর প্রকৃতি ডানা মেলে উড়ছে। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য আবারো হারিয়ে যাবে মানুষের অমানবিকতায়, যানবাহন আর কলকারখানায় ধোয়াঁয়। এই প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্ক সবচেয়ে গভীর। আমাদের চারপাশের প্রকৃতিটা যতোটা সতেজ থাকবে, আমাদের ভেতরকার সৌন্দর্য ততই প্রাণবন্ত হবে। তাই এই প্রকৃতিকে ফ্রেমবন্দী করতেই মূলত আমার এই চিত্রঅঙ্কন। এই চিত্রকর্ম বিক্রির ৯০ শতাংশ টাকা ক্যান্সার আক্রান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদির জন্য গঠিত তহবিলে দান করা হবে।
কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অনলাইনভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ‘আয়নাঘরে’র স্বত্বাধিকারী জান্নাতুল কাউসার রুমকি।
জানা যায়, মেহেদী দুরারোগ্য ক্যান্সার জয় করার পর সম্প্রতি নতুন করে তার ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ছয় থেকে সাতটি কেমোথেরাপি দিতে হবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় তিন লাখ টাকা। কিন্তু পরিবারের কাছে এই ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
একজন চিত্রশিল্পী রংতুলির আচড়ে প্রকৃতিকে ফ্রেমবন্দী করা যায় নতুন রঙে। সমাজ, দেশ ও প্রকৃতিকে দেখতে শেখায় একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। যেমনটা রুমকির চিত্রাঅঙ্কন মূলত শখের বশে প্রকৃতিকে ফ্রেমবন্দী। আর চিত্রকর্মের আয় দিয়ে অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন রুমকি। রুমকির নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘আয়নাঘরে’র মাধ্যমে চিত্রকর্মগুলো বানানো হয়েছে।
এর মধ্যে নান্দনিক নকশার ১৭টি চিত্রকর্ম বানানো হয়েছে, যা বিক্রির ৯০ শতাংশ মেহেদির জন্য গঠিত তহবিলে দান করা হবে। বাকি ১০ শতাংশ টাকা ছবি তৈরির সরঞ্জামাদি কিনতে ব্যবহার করা হবে।
‘করোনার ঘরবন্দি থেকে ছবিগুলো এঁকেছি। মূলত চিত্রঅঙ্কনের প্রতি ঝোকঁ ছোটবেলা থেকেই। কোয়ারেন্টাইনে সুযোগ পেয়ে চিত্রগুলো আকাঁ হয়েছে। প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার জায়গা থেকেই ছবিগুলো আকাঁর প্রতি আগ্রহ জন্মেছে।
চিত্রকর্ম বিক্রি করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সময়ের আলো’কে বলেন, একমাত্র মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই মেহেদীর পাশে দাড়াঁনো। আমার মনে হয় আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে এই তাজা প্রাণটিকে ফিরিয়ে আনতে পারব। আর যেহেতু এই জায়গাটিতে আমার কাজ করার সুযোগ আছে তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এগুলো নিয়ে মেহেদির পাশে দাঁড়াতে পাারলে ভালো লাগবে।
রুমকি আরো জানান, আপনার ঘরের দেয়ালজুড়ে যদি প্রশান্তিময় নানান ছবি রঙ্গিন সব ক্যানভাসে ঝুলে থাকে, নিশ্চয়ই আপনার ভালো লাগবে। আর এর পেছনে যদি একজন অসহায় মানুষকে বাঁচানোর গল্প থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই। এ সুযোগটাই করে দেয়ার চেষ্টা করছি আমি। আমার মত ছোট মানুষের চিত্রকর্মের কিনার মাধ্যমে সবাই মেহেদির পাশে দাঁড়াবে এটাই প্রত্যাশা। প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন : ০১৭৫৪-৮২৮৪০০ এই নম্বরে।
Leave a Reply