1. [email protected] : Touhidul islam Robin : Touhidul islam Robin
  2. [email protected] : Mozammel Alam : Mozammel Alam
  3. [email protected] : nakshibarta24 :
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১১ অপরাহ্ন
১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্মৃতিচারণ: অপূরনীয় শূন্যতা

  • প্রকাশকালঃ রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০
  • ৪৮১ জন পড়েছেন
ফরহাদ মির্জা পারভেজ   :


সদ্য প্রয়াত লায়ন এনায়েত উল্লাহ এফসিএ। আমার শ্রদ্ধেয় জেঠু। পুরো পরিবার জুড়ে তিনি ছিলেন বটবৃক্ষ। আমরা তার স্নেহের সুনিবিড় ছায়াতলে আশ্রিত ছিলাম। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি ছিলেন আমার জীবনের অন্যতম অভিভাবক। প্রবাসী বাবাকে তেমন কাছে না পেলেও জেঠুকে সবসময় কাছে পেতাম। আমার চাচাতো ভাইদের মধ্যে তিনি আমাকেই বেশি ভালোবাসতেন।

জেঠু প্রতিবার আমাদের বাসায় আসার আগে আমাকে ফোন করে বলতেন, কি কি খাবার খাবেন। আমি বাজার থেকে সব খুঁজে খুঁজে নিয়ে আসতাম, ছোট মাছ, শাক, হাঁস, কবুতরের বাচ্চা ইত্যাদি। নতুন প্রকারের কোন মিষ্টি পেলে সেটাও আনতে ভুলতাম না। জেঠু মিষ্টি পছন্দ করতেন, তবে কম খেতেন। আর তাছাড়া তিনি খাবারও খুব কম খেতেন। কিন্তু একটু একটু করে সব প্রকারের খাবারই খেতেন। মাঝে মাঝে খেতে চেয়েও খেতেন না আন্টির বারণ আছে বলে।
জেঠু লাকসামে আসা মানেই আমাদের বাসায় আসা, থাকা-খাওয়া, গল্প-আড্ডা। তিনি এলে আমার খুবই আনন্দ লাগতো। আর সবচেয়ে মজার কথা হলো, জেঠুর আগমনে আমার পকেট ভারী হতো। কেননা বাজার করার অবশিষ্ট টাকাটা আমার পকেটেই ঠাঁই পেতো। এটা অবশ্য বেশ আগেকার কথা।
জেঠু সবসময় হাসিমুখে থাকতেন। তার মায়াবী চাহনিতে আমি শাসন-আদর দুটোই খুঁজে পেতাম। সবসময় দেখা হলেই সর্বপ্রথম আমার পড়াশুনার খবর নিতেন। মাঝে মাঝে আমাকে বকতেন। আবার পিঠে হাতে চাপড়ে বলতেন ঠিকমত পড় বাবা। না হয় সফল মানুষ হতে পারবি না। তবে জেঠুর বকা শুনতে আমার অনেক ভালো লাগতো। আমি এটা ভেবে হাসতাম জেঠু বকে, আবার হাসে। এ বড় আজব শাসন। মাঝে মাঝে আমি বিব্রত হতাম, তিনি যখন বই নিয়ে আমার পড়া ধরতেন। এটার অর্থ কি? এই শব্দ কেন ব্যবহার হলো? নানান প্রশ্ন করতেন আমায়। এ ভয়ে মাঝে মাঝে জেঠুর সামনে যেতাম না, তিনি এলে বাসায় থাকতাম না। বাজার করে দিয়েই বাইরে চলে যেতাম।
জেঠু ঢাকায় চলে গেলে আমি যদি নিয়মিত কল না দিতাম, তিনি নিজেই আমাকে কল দিয়ে বলতেন কল  দাওনি কেন?  হাসিমুখে বকা দিতেন। দুই ঈদে জেঠুর কাছ থেকে ঈদি (সালামি) পাওয়াটা ছিলো আমার ঈদ আনন্দের বড় অংশ। তিনি সবার থেকে আমায় একটু বেশিই দিতেন। হয়তো এটা বেশি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ছিলো তাই।
আমার শৈশব ও কৈশোরে জেঠুর স্নেহের ছায়াতলে কাটানো মুহূর্তগুলোর স্মৃতিচারণ আমি লিখে শেষ করতে পারবো না। বেশি মনে পড়ে জেঠুর সাথে এক সাথে খাবার খাওয়ার সময়টা। শেষবার যখন ওনাকে দেখতে হসপিটালে গিয়েছিলাম, জীবনের অন্তিম মুহূর্তে এসেও তিনি আমার এবং আমার পরিবারের খোঁজ-খবর নিতে ভুলেন নাই। সেদিনও তিনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছিলেন। তবে আমি এটা ভাবতে পারিনি যে, এটাই আমার মাথায় জেঠুর শেষ পরশ ছিলো।
এত তাড়াতাড়ি জেঠুকে হারাবো ভাবিনি। তার মৃত্যুর পর মহামারী করোনা পরিস্থিতিতেও জানাযার নামাজে হাজার হাজার মানুষের সমাগম দেখে অনুমান করতে পেরেছি, তিনি মানুষের কাছে কতটা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্র ছিলেন। জেঠুর শূন্যতা কখনো পূরণ হবে না। আমরণ ওনার আদর-শাসনের স্মৃতিগুলো বুকে লালন করেই পাড়ি দেবো জীবনের কণ্টকাকীর্ণ পথ। ওপাড়ে ভালো থাকুক প্রিয় জেঠু।

খবরটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

বিজ্ঞাপন

Laksam Online Shop

first online shop in Laksam

© All rights reserved ©nakshibarta24.com
কারিগরি সহায়তায় বিডি আইটি হোম