নকশী বার্তা ডেস্ক : প্রায় পাঁচ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ধামরাইয়ের পাবলিক লাইব্রেরি ও শিল্পকলা একাডেমি। ফলে বই পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সব বয়সী বইপ্রেমীরা। সেইসাথে শিল্পকলা একাডেমির জন্য সাংস্কৃতিক দিক থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে কচিকাঁচারা।
স্থানীয়দের দাবি, একসময় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের এই পাবলিক লাইব্রেরিতে সকল বয়সের লোকজনের আনাগোনা থাকতো। মুখরিত থাকতো পাবলিক লাইব্রেরি। সময়ের পরিবর্তনে আধুনিক মানের মোবাইল ফোনের ছড়াছড়িতে বই পড়ার অভ্যাস কমতে থাকে। অবসর সময়ে বর্তমান প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দিকে ঝুঁকছে। দিনরাত ফেসবুক, ইউটিউবেই তাদের সময় পার হচ্ছে। কেউ কেউ আবার মাদকাসক্তও হয়ে পড়ছে।
এসব নানা কারণে দ্রুত লাইব্রেরিটি খুলে দেয়া উচিৎ বলে মনে করে স্থানীয়রা। সেইসাথে উপজেলার শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম চালু রাখলে অবসর সময় কাটানোর সুযোগ পাবে তারা।
ধামরাই উপজেলা চত্বরে ১৯৯৬ সালে নির্মাণ হয় ধামরাই পাবলিক লাইব্রেরি। শুরুতে নানা বয়সী পাঠকের পদচারণা ছিল লাইব্রেরিটিতে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে বইপ্রেমীদের আগাগোনা। একসময় তা বন্ধ হয়ে যায়।
পাবলিক লাইব্রেরির সাথেই রয়েছে ধামরাই শিল্পকলা একাডেমির ভবন। সেটি এখন ময়লা আবর্জনা, ঘাস দিয়ে ভরপুর। ভবনের দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা না করে অবহেলার কারণে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠান দুটি আলো হারাতে বসেছে।
প্রায় ৫ বছর আগে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় লাইব্রেরিটি। বই পড়ার সুযোগ কমায় অবসর সময়টা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছে না বইপ্রেমী তরুণ প্রজন্ম। ফলে ঝুঁকে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে লাইব্রেরি ভবনের জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে, চেয়ার টেবিলে জমেছে ধুলার স্তর, নেই বই রাখার মতো তাক। যে কোন সময়ে ভেঙে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। নেই বই সংরক্ষণের কোন বালাই। যদি উপজেলা চত্বরের পাবলিক লাইব্রেরি ও শিল্পকলা একাডেমির সঠিক সংরক্ষণ না করা হয় তবে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠান দুটি হারিয়ে যাবে ইতিহাসের পাতা থেকে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রাণের দাবি, দির্ঘদিনের ইতিহাস জড়িত এই লাইব্রেরি ও শিল্পকলা একাডেমির সঠিক সংরক্ষণ করা হোক। আবার মানুষের সরগরম হয়ে উঠবে প্রতিষ্ঠান দুটি। ফিরে পাবে নতুন প্রাণ।
লাইব্রেরিটি শিগগিরই খুলে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামিউল হক। কিন্তু এখনো তা সম্ভব হয়নি। ঘাস ও নোংরা ময়লায় ভরে আছে প্রতিষ্ঠান দুটি। দেখলে মনে হয় প্রতিষ্ঠানটি ঠিক যেন অভিভাবকহীনতার মধ্যে রয়েছে।
তবে লাইব্রেরি ও শিল্পকলা একাডেমি খুলে দিলে আবারো বইপ্রেমীরা ভিড় করবে লাইব্রেরিতে, দেখা যাবে সংস্কৃতি মনা ব্যক্তিদের এমনটাই আশা স্থানীয়দের।
Leave a Reply