নিজস্ব প্রতিনিধি :
গত ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্থানীয় আগমন ফুড পার্ক এন্ড কমিউনিটি সেন্টারে দিন ব্যাপী লাকসামের অনলাইন ভিত্তিক উদ্যোক্তাদের সংগঠন লাকসাম বাজার এর সদস্যদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ৫০জন বিভিন্ন পন্য সামগ্রি নিয়ে কাজ করা উদ্যোক্তারা মিলিত হন।
ওইদিন সকালে গ্রুপ মডারেটর হাজেরা কুদ্দুস রুপার অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় সদস্যদের পরিচিতি পর্ব দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন মজার খেলা ও সদস্যদের আড্ডায় কার্যক্রম এগিয়ে যায়। অনুষ্ঠানে একে একে উদ্যোক্তারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। সকল সদস্যদের শুভেচ্ছা স্মারক প্রদানের পাশাপাশি গ্রুপের সেরা ক্রেতা ও টপ কন্ট্রিবিউটরদের পুরস্কৃত করা হয়।
গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও এডমিন জি.এম.এস রুবেল বলেন, লাকসাম উপজেলার কিছু তরুণ উদ্যোক্তারা মিলে গত ২মাস আগে দেশিয়, খাঁটি-নির্ভেজাল পন্য নূন্যতম মূল্যে বিক্রি করার লক্ষকে সামনে রেখে চালু করা হয়, লাকসাম বাজার নামক ফেসবুক গ্রুপটি। চালু হওয়ার পর থেকে ব্যপক উৎসাহ পেয়ে একে একে এগিয়ে আসতে থাকে লাকসাম এলাকার নতুন নতুন উদ্যোক্তাগন। সামাজিক সম্পর্ক গড়ার মাধ্যমে পরিচিতি অর্জন করে পন্য সামগ্রি লেনদেনের প্রয়াসে বর্তমানে প্রায় ১৫০ জনের অধিক উদ্যোক্তা জড়ো হয়ে কাজ করছে গ্রুপটিতে এবং বর্তমানে ২৩০০ এর অধিক সদস্য নিয়ে একটি পরিবারে পরিনত হয়েছে ইতিমধ্যে। সদস্যদের উদ্যেশ্য নিজেদের পন্য নিজেরা ক্রয় বিক্রয় করার মাধ্যমে গ্রুপকে এগিয়ে নেয়া। আমি নিজেও এখানে মধু নিয়ে কাজ করে সাফল্য অর্জন করেছি।
লাকসাম বাজার ফেসবুক গ্রুপের টপ কন্ট্রিবিউটর সাইকা মাকসুদ বলেন, আমি লাকসামের বউ, দীর্ঘদিন আমার স্বামীর চাকরির সুবাদে সৌদি আরব থাকাকালিন বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে মিশে নানান পদের রান্না শিখেছি। আমি লাকসাম বাজার গ্রুপে যুক্ত হওয়ার পর এখন স্বপ্ন দেখছি নিজেও একজন উদ্যোক্তা হয়ে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো।
আরেকজন উদীয়মান উদ্যোক্তা সায়মা খানম বলেন, আমি নিজেকে এখন আর একা ভাবছিনা। আমার সাথে আমার লাকসাম বাজার পরিবার আছে। আমি নির্ভয়ে আমার হোমমেড ফুডের কাজ চালিয়ে যেতে পারছি। মাটির তৈজসপত্র নিয়ে কাজ করা মনি মজুমদার বলেন, লাকসাম বাজার গ্রুপটি না হলে আমি আমার মেধাকে কাজে লাগানোর কোন পথ হয়তো পেতাম না।
সদস্য মামুনুর রশীদ বলেন, আমি এই গ্রুপের একজন হতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। গ্রুপ মডারেটর হাজেরা কুদ্দুস রুপা বলেন, আমার অবসর সময়টি কাটছে লাকসাম বাজার গ্রুপে। আমার স্বপ্ন আত্মনির্ভরশীল হয়ে নিজের পায়ে দাড়ানো। ইতিমধ্যে বাটিকের জামাকাপড় তৈরি সহ কেক ও দই নিয়ে কাজ করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি।
অন্যান্য উদ্যোক্তাদের মাঝে আরো বক্তব্য দেন অর্গানিক ফুড নিয়ে কাজ করা সদস্য মনজুরুল কাইয়ুম শাওন, মোটরসাইকেল যোগে ক্রেতার কাছে উদ্যোক্তাদের পন্যে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্বে থাকা জাবের হোসেন দিপু, হোমমেড ফুড নিয়ে কাজ করা সালমা সিমু, হবু উদ্যোক্তা সাফায়েত হোসেন সাফা, বেডিং আইটেম ও খাবার নিয়ে কাজ করা আরমান হোসেন, পার্লার ও হ্যান্ড পেইন্ট নিয়ে কাজ করা নাছিমা হাসান তিথি, শরীফ মজুমদার এবং প্রফেসর মোজাম্মেল হোসেন পেয়ার প্রমুখ।
মোজাম্মেল হোসেন পেয়ার তার বক্তব্যে বলেন, আমি এই গ্রুপের একজন সদস্য হিসেবে এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আনন্দ অনুভব করছি। আমি এসেছি এই তরুণদেরকে তাদের কাজ এগিয়ে নিতে উৎসাহ প্রদান করতে। আমারও স্বপ্ন শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি নিজে কিছু একটা করার।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফটোগ্রাফি নিয়ে কাজ করা আমিনুল হক। বিছানা চাদর ও থ্রিপিস নিয়ে কাজ করা নূরজাহান চাঁদনী সহ আরো অনেকে।
বিকেলে পুরস্কার বিতরণ করা হয় দিনব্যাপী বিনোদন মূলক খেলার বিজয়ীদের মাঝে। এরপর সাংস্কৃতিক সংগঠন লাকসাম নাট্যজংশন ও লাকসাম বাজারের সদস্যরা মিলে পরিবেশন করে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এতে গান পরিবেশন করেম মোজাম্মেল হোসেন পেয়ার, জান্নাতুল ফেরদৌস নুপুর, সুবাহ এবং নাজনিন অন্তরা। নৃত্য পরিবেশন করেন সুমামা তারান্নুম স্নেহা এবং যাদু পরিবেশন করেন সাফায়েত হোসেন সাফা।
শেষে কেক কেটে গ্রুপের ২৩০০+ সদস্য হওয়াকে উদযাপন করার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।
Leave a Reply