সাকিব অমির ফেসবুক থেকে :
মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়তে বসলাম, হঠাৎ খেয়াল করলাম, পাশের লোকটি চোখে দেখতে পায় না। নামাজে মনোযোগ দেওয়া একটু কঠিন হয়ে গেল। নামাজ শেষে লোকটার জন্য অপেক্ষা করলাম। লোকটা মিনিট দশেক সাহায্যের জন্য দাঁড়ালো। লোকটা সম্পর্কে জানতে ভীষণ কৌতূহল পেয়ে বসল।
দুই চারজন পাশ কেটে যাবার সময় অর্থ সাহায্য দিচ্ছিল। লোকটা দিব্যি নোটগুলো ধরে বলে দিচ্ছিল কত টাকার নোট। টাকার লেনদেন দেখে বুঝার উপায় নেই লোকটা অন্ধ। আল্লাহ যখন কাউকে কোনদিক দিয়ে দুর্বলতা দেন, অন্যদিক থেকে অনেক সময় কিছু ইন্দ্রিয় ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেন।
জিজ্ঞেস করলাম, আপনার নাম কি? একটু থতমত খেয়ে নাম বলল, কেউ আসলে নাম জিজ্ঞেস করে না, তাই অবাক হইছি।
চলুন হাঁটি,
বললাম, তুমি যে দেখতে পাওনা, আফসোস হয়না?
জি না,
যেইসব ঘটনা শুনি চারিদিকে, মনে হয় – না দেইখাই ভাল আছি। যারা দেখে তারাও তো কতরকম কষ্টে আছে। আমি তো সেই তুলনায় ভাল আছি।
অবাক হলাম,
একটা অন্ধ লোক এত বছর কারো সাহায্য ছাড়াই চলছে। আর আমরা অনেকে সব কিছু থাকার পর ও কিছু করি না, করতে ভয় পাই, সাহায্যের জন্য বসে থাকি।
বাসার সামনে এসে পড়েছি। কিছু সাহায্য এনে দিলাম। লোকটি আবেগাক্রান্ত হয়ে বলল, ভাইজান, টাকা পয়সা অনেকেই দেয়। কিন্তু কেউ ২ মিনিট সময় দেয় না। আমাকে কথা বলার যোগ্য মনে করে না। আমার খুব বেশি ভাল লাগতেছে, আপনি এতক্ষণ আমার সাথে কথা বলতেছেন।
মনটা হটাত খুব ভাল হয়ে গেল। পাপী জীবনে অল্প ২/১ টা যদি পূণ্য করে থাকি মনে হল, এটা তার একটা।
জীবনে অনেকের সাথে ছবি তুলেছি লোকটিকে দেখে খুব ইচ্ছে করছিল একটা ছবি তুলি।
Leave a Reply