1. [email protected] : Touhidul islam Robin : Touhidul islam Robin
  2. [email protected] : Mozammel Alam : Mozammel Alam
  3. [email protected] : nakshibarta24 :
রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন
৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
পিপলস অ্যাডাপটেশন প্ল্যানস ফর ইনক্লুসিভ ক্লাইমেট স্মার্ট সিটিস’ প্রশিক্ষন লাকসামে ইংরেজি দৈনিক প্রেজেন্ট টাইমস পত্রিকার ১০ম পুর্তি উদযাপন মানবিক সমাজ গঠনে দেশের সকল মানুষের সহযোগিতা চাই -ডা.শফিকুর রহমান দেশে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই -মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারত পানি না দিলে জাতিসংঘে যাবে বিএনপি: তারেক রহমান বিএনপি মহাসচিবের জনসভা সফল করতে লাকসামে সংবাদ সম্মেলন  বর্ণাঢ্য আয়োজনে লাকসামে যুগান্তরের রজতজয়ন্তী উদযাপন ১৭ বছরের জটবাঁধা বিরোধের অবসান : লাকসামের বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা একট্টা বিজয় দিবসে ভবিষ্যত বাংলাদেশ নিয়ে তারেক রহমানের বার্তা বিজয় দিবসে ছাত্রশিবিরের র‍্যালি

বেহুলার বাসর ঘর

  • প্রকাশকালঃ শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩০৩ জন পড়েছেন

বেহুলার বাসর ঘর


নকশী বার্তা ডেস্ক :

চম্পাই নগরে চাঁদ সওদাগর নামে এক ব্যবসায়ী ছিলেন। মনসাদেবী বরপ্রাপ্ত হয়েছিলেন চাঁদ সওদাগর। যদি তিনি মনসা পূজা দেন তাহলে ত্রিলোকে মনসার পূজা প্রচলিত হবে। তবে পুরোপুরি মনসা বিদ্বেষী ছিল চাঁদ সওদাগর। তাই সে আর রাজি হলো না। চাঁদ সিংহল বাণিজ্য শেষ করে ফেরার পথে কালিদাহ সাগরে মনসাদেবী ঝড় সৃষ্টি করে। সবগুলো জাহাজ পানিতে তলিয়ে গেলেও প্রাণে বেঁচে যান চাঁদ সওদাগর। ঐ সময়ে চাঁদ সওদাগরের এক পুত্র জন্ম হয় যার নাম লখিন্দর। কিন্তু এক গণক ভবিষ্যৎবাণী করে বলেন বাসর ঘরে লখিন্দরকে সাপ কামড়াবে।

লখিন্দর প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বেহুলার সাথে তার বিয়ে ঠিক করা হয়। তাদের জন্য তৈরি করা হয় লোহার বাসর ঘর। বাসর রাতে অনেক নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও মনসাদেবী সুতার আকার ধারণ করে ঘরে প্রবেশ করে লখিন্দরকে দংশন করে।

সে যুগের রীতি ছিল সাপের কামড়ে কেউ মারা গেলে দাহ না করে ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হত। লখিন্দরের সঙ্গে ভাসিয়ে দেওয়া হলো বেহুলাকে। ছয় মাস ধরে জলে ভাসতে ভাসতে এ গ্রাম থেকে সে গ্রাম গেল। এক সময় পচন ধরা শুরু হলো লখিন্দরের দেহে।

বেহুলা মনসার কাছে প্রার্থনা করতে থাকে স্বামীর প্রাণভিক্ষা চেয়ে। এক সময় ভেলাটি এসে ঠেকে একটি গ্রামের ঘাটে। সে গ্রামে বাস করতো মনসার পালক মাতা নিতা। নিতা ঘাটে বসে দেখতে লাগলো মনসার কাছে ভক্ত বেহুলার প্রার্থনা। তার মন গলে গেল। অবশেষে নিতা অলৌকিক ক্ষমতাবলে বেহুলা ও মৃত লখিন্দরকে স্বর্গে উপস্থিত করেন।

চোখ খুলে বেহুলা দেখতে পেল মনসাকে। মনসা বলে উঠলেন, ‘তুমি তোমার স্বামীকে ফিরে পাবে। তবে শর্ত হচ্ছে তোমার শ্বশুরকে আমার পূজারী করতে হবে।’ বেহুলা উত্তর দিল, ‘আমি পারবো মা।’ সাথে সাথে চোখ মেলে তাকায় লখিন্দর। নিতার সাহায্যে আবার মর্ত্যে ফিরে এলো বেহুলা। তার শ্বশুরকে সব ঘটনা খুলে বললো। এরপর চাঁদ সওদাগরের পক্ষে মনসার পূজায় না বলা আর সম্ভব হলো না।

কিংবদন্তির গল্পগাথা যে বেহুলা-লখিন্দরকে নিয়ে, সেই বেহুলা ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের মেয়ে। ওখানকার ঐতিহাসিক এক জমিদার বাড়ির দুলালী কন্যা ছিলেন অনিন্দ্য রূপে -গুণের অধিকারিণী বিশ্বনন্দিত বেহুলা। ষোড়শ শতাব্দীর প্রাচীন লোককাহিনীর সতী-সাবিত্রী কিংবদন্তির নায়িকা বেহুলা সুন্দরীর বাবার নাম বাছোবানিয়া ওরফে সায় সওদাগর। সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আছে বেহুলার পৈতৃক ভিটায় জীয়নকূপ। আর বগুড়ার গোকূলে যুগের পর যুগ পাড়ি দিয়ে টিকে আছে তার বাসরঘর।

বগুড়ার গোকুল মেধ নামক স্থানটি বেহুলার বাসর ঘর অথবা লখিন্দরের মেধ নামেও পরিচিত। বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে গোকুল গ্রামে খননকৃত এই প্রত্নস্থলটির অবস্থান। প্রত্নস্থলটি এদেশের জনপ্রিয় লোকগাথার নায়ক-নায়িকা বেহুলা-লখিন্দরের বাসর ঘর বলে জনসাধারণের কাছে পরিচিত।

এখানে একটি বৌদ্ধ স্তম্ভ রয়েছে যা সম্রাট অশোক নির্মাণ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। স্তম্ভের উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। স্তম্ভের পূর্বার্ধে রয়েছে ২৪ কোণ বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ একটি বাথরুম। এখানে ১৭২টি চারকোণা কক্ষসহ একটি মঞ্চ পাওয়া যায়।

তবে এ স্থানটিকে লখিন্দরের মেধও বলা হয়ে থাকে। ১৯৩৪-৩৬ সালে এন.জি মজুমদার কর্তৃক খননের ফলে এখানে একটি বিশাল মন্দিরের বা স্তুপের ভিত্তি উন্মোচিত হয়েছে। এ ভিত্তিটি স্তরে স্তরে উঁচু করে কুঠুরি নির্মাণ রীতিতে নির্মিত।

বেহুলার বাসরঘরে ১৭২টি কুঠুরি বিভিন্ন তলে মাটি দিয়ে ভরাট করে নিচ থেকে উপরের দিকে ক্রমহ্রাসমান করে এমনভাবে সাজানো হয়েছিল যাতে এগুলো কোনো সুউচ্চ মন্দির বা স্তূপের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এরূপ স্তরে উঁচু করা বহুতল বিশিষ্ট সমান্তরাল ঠেস দেওয়ালযুক্ত ভিতের উপর প্রকৃত স্থাপত্য নির্মাণ রীতি প্রাচীন বাংলাদেশের একটি তাৎপর্যপূর্ণ স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য।

এ মন্দিরের সঙ্গে পরবর্তী গুপ্তযুগের (ছয়-সাত শতক) কতগুলো পোড়ামাটির ফলক পাওয়া গেছে। সেন যুগে (১১শ- ১২শ শতক) এখানে বারান্দাযুক্ত একটি বর্গাকৃতির মন্দির নির্মিত হয়েছিল। এ মন্দিরে বহু গর্তযুক্ত একটি ছোট প্রস্তর খন্ডের সঙ্গে ষাঁড়ের প্রতিকৃতি উৎকীর্ণ একটি সোনার পাত পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারণা করা হয় যে, এটি একটি শিব মন্দির ছিল।

বেহুলার বাসরঘর একটি অকল্পনীয় মনুমেন্ট। বর্তমান গবেষকদের মতে, এ মনুমেন্ট ৮০৯ থেকে ৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেবপাল নির্মিত একটি বৈদ্যমঠ। এ স্তূপটিই বাসরঘর নয়। এ স্তূপটির পশ্চিমার্ধে আছে বাসরঘরের প্রবাদ স্মৃতিচিহ্ন। পূর্বার্ধে রয়েছে ২৪ কোণ বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ একটি বাথরুম। ওই বাথরুমের মধ্যে ছিল ৮ ফুট গভীর একটি কূপ।

কথিত আছে, কূপটিতে বেহুলা লখিন্দর মধুনিশি যাপনের পর কূপে রক্ষিত জলে স্নান করে তাতে শুদ্ধতা লাভ করতে সক্ষম হতেন। বগুড়ার মহাস্থানগড় দেখে ফিরবার পথে বেহুলার বাসর ঘর দেখে ফিরতে পারবেন।

খবরটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

বিজ্ঞাপন

Laksam Online Shop

first online shop in Laksam

© All rights reserved ©nakshibarta24.com
কারিগরি সহায়তায় বিডি আইটি হোম