ছবি : ঝুপড়ি ঘরে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন নিঃস্ব সালেহা।
মোজাম্মেল হক আলম :
৭০ বছরের বৃদ্ধা ছালেহা। বাড়ি কোথায় কেউ জানেনা। থাকেন একটি স্যাঁতস্যাঁতে ঝুপড়ি ঘরে। নেই স্বামী সন্তানের কোন ঠিকানা। একসময় করতেন ভিক্ষাবৃত্তি, শরীর এবং দু-পায়ের শক্তি হারিয়ে এখন তিনি ঘরবন্দি। দিনে একবেলা খেয়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। মিলছেনা কোন প্রকার সহযোগীতাও। ঝড়-বৃষ্টি কিংবা শীত-গ্রীষ্মতে দিন কেটে গেলেও কেউ খোঁজ রাখেনি তার। যেন দেখার কেউ নেই।
বৃদ্ধা এই ছালেহা বেগমের বসবাস নোয়াখালী সোনাইমুড়ী চৌরাস্তা থেকে ৮-১০ কিঃমিঃ পরেই নোয়াখালী-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে নতুন বাজার (চাষীর হাট) এলাকায় কলা গাছের বাগানের ভেতর। সেখানে পূর্বের ভিক্ষাবৃত্তির উপার্জন দিয়ে তিনি তৈরি করেছেন একটি ঝুপড়ি ঘর। সেই ঘরেই খেয়ে না খেয়েই কাটে তার দিনরাত।
বারবার প্রশ্নের পর বৃদ্ধা ছালেহা জানান, দু-পায়ের শক্তি হারিয়ে অচল হওয়ার পর তিনি এখন আর আগের মতো করে চলাফেরা অথবা কথা বলতে পারেন না। স্বামী সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করতেই দু-চোঁখের পানি ছেড়ে বললেন তার কেউ নেই। এর বেশি কিছু জানতে চাইলে তিনি মুখ পিরিয়ে নেন। ভিটে-মাটিহীন এই ছালেহা বেগমের দিন কাটে এখন প্রায় না খেয়েই। কেউ তাকে সহযোগিতাও করছেন বলে জানান তিনি। আবার ঝড়-বৃষ্টি কিংবা শীত-গ্রীষ্মতে তাকে দিন কেটে গেলেও কেউ খোঁজ নিতে আসেনা। রোগাক্রান্ত হয়ে তিনি দিনরাত মুয়ে থাকেন নোংরা মাটির বিছানায়।
অসহায় এই ছালেহা বেগমকে নিয়ে এলাকার কয়েকজন যুবক কয়েকবার সহযোগিতা কামনা করে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খান সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি কামনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখি করেন। কিন্তু পাওয়া যায়নি কোন উত্তর।
স্থানীয় যুবক সোহেল জানান, ছালেহা কোথা থেকে এসেছেন তিনি জানেন না। তবে দীর্ঘদিন ধরে এই কয়েকটি কলাগাছের আড়ালে তিনি ঝুপড়ি ঘরটিতে বসবাস করছেন। পথচারী ছাড়া তেমন কাউকে দেখিনি তাকে সহযোগিতা করতে। এখন যদি প্রশাসনিক অথবা জনপ্রতিনিধিদের কেউ তাকে বৃদ্ধাশ্রম অথবা সরকারি কোন যায়গায় রাখতো তাহলে ভালো হতো। কারণ সেতো কারোনা কারো স্বজন।
Leave a Reply