মোজাম্মেল হক আলম, লাকসাম :
কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ের এক কর্মচারী অবসর গ্রহনের ৩৮ বছর পরও অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা ও পেনশন থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। অনেক দৌড় ঝাপ করেও পেনশন না পেয়ে ওই কর্মচারী দীর্ঘদিন শারিরীক অসুস্থতা ভোগ করে অবশেষে ২০০৩ সালে মৃত্যুবরন করেন। ভূক্তভোগী ওই রেল কর্মচারী লাকসাম রেলওয়ে লোকোসেডের বুকিং ক্লার্ক গ্রেড-১ মোঃ সফি। বর্তমানে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে প্রয়াত ওই রেল কর্মচারীর পরিবার।
জানা যায়, রাজনৈতিক বিরোধে তৎকালীন চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ের দাপ্তরিক কেরানী বিহারী আব্দুল হামিদ খাঁনের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে অবসরত্তোর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এবং পেনশন বঞ্চিত হন রেল কর্মচারী মোঃ সফি। স্বামীর মৃত্যুর পর একাধিকবার রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিয়েও সদুত্তর পাননি বিধবা স্ত্রী তাহেরুন নেছা। প্রয়াত রেল কর্মচারী মোঃ সফির পরিবার সম্প্রতি মানবেতর জীবন যাপনের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি আবেদনও দিয়েছেন।
তাহেরুন নেছা জানান, ১৯৪৬ ইং সালের ২৫ নভেম্বর অবিভক্ত ভারতের আসাম বেঙ্গল রেলওয়েতে যোগদান করেন তার স্বামী প্রয়াত রেল কর্মচারী মোঃ সফি। দীর্ঘ ৩৭ বছর সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে ১৯৮৩ ইং সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম যান্ত্রিক বিভাগে লাকসাম লোকোসেড থেকে বুকিং ক্লার্ক গ্রেড-১ম হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তীতে চাকরিকালে তিনি তৎকালীন চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ের দাপ্তরিক কেরানী বিহারী আব্দুল হামিদ খাঁনের ষড়যন্ত্রের শিকার হন। নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী দাবি করায় সফির উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন আব্দুল হামিদ খাঁন। পরবর্তীতে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তিনি সফির সার্ভিস ফাইলে তার জন্মতারিখ ২৬/১১/১৯২৬ ইং এর নীচে ২৬/১১/১৯৩১ ইং লিখেন এবং ষড়যন্ত্র করে একসময় তার সার্ভিস ফাইলও লুকিয়ে ফেলেন। সফির সার্ভিস ফাইলে দ্বৈত জন্মতারিখ হওয়ায় এবং পরবর্তীতে সার্ভিস ফাইল না পাওয়ায় তার অবসর পরবর্তী চূড়ান্ত নিষ্পত্তিসহ পেনশন র্নিধারণ সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply