মুহা : জাকির হোসাইন :
সৃষ্টির সেরাজীব মানব সম্প্রদায়। যুগে যুগে মানব সভ্যতার উৎকর্ষ সাধন করে আসছে দেশ প্রেমিক, জ্ঞানী, সৃজনশীল ও নৈতিকতা সম্পন্ন দক্ষ যুব সমাজ। প্রবাদে আছে- “আজকের শিশু আগামীদিনের ভবিষ্যত।” যতই থাকুক রেশ, যুবকরাই গড়বে দেশ, Youth is hot and bold ইত্যাদি।
তাই আমার স্বল্পজ্ঞানের পরিসরে বলছি, দক্ষ যুবকরাই আমাদের দেশের মূল চালিকা শক্তি। দক্ষ হবে সঠিক জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে আর দেশ প্রেমিক ও আদর্শ মানব সম্পদ হবে নৈতিক গুনাবলী অর্জনের মাধ্যমে। দক্ষ-নৈতিক যুব সমাজই একটা জাতির নক্ষত্র।
এক্ষেত্রে আরো বলা যায়, কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে হয় দক্ষ জন সম্পদ আর ধর্মচর্চার মাধ্যমে হয় আদর্শ গুনাবলীর অধিকারী।
পরিতাপের বিষয় যে, বর্তমানে আমাদের কিশোর-যুবক এবং ঐ বয়সের শিক্ষার্থীরা লেখা-পড়ার পরির্বতে আমোদ-প্রমোদ তথা আকাশ সংস্কৃতির লিলা খেলায় মত্ত আছে।
আজ-কাল সহজলভ্য বিষয় হচ্ছে- অনৈতিকতার আকাশ সংস্কৃতি এবং সহজে প্রাপ্ত টাকা-পয়সা। অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং বিশেষ সুবিধার্তে রাজনৈতিক চত্র-ছায়ায় অবস্থানের কারণে আমাদের এ সব নক্ষত্র গুলো যেন ক্রমে ক্রমে ধ্বংসকূপে নিমজ্জিত হচ্ছে, যেমনি ভাবে মহকাশের নক্ষত্র গুলো Blackhold দিগভ্রান্ত হয়ে নিমজ্জিত হয়। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় আমরা র্ববর জাতিতে পরিনত হতে পারি।
একটি বিষয় উল্লেখ না করলে নাই হয়, বিজ্ঞানীরা মানব কল্যানেই সব কিছু আবিষ্কার করেন। কিন্তু মানুষ তা অপব্যবহার করে নিজেরই ক্ষতি করে।
বর্তমানে কিশোরদেরকে এনড্রয়েড মোবাইল সেট এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা দেয়ার ফলে তারা নীল ছবি ও ফর্নোগ্রাফী খুব সহজেই পেয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে যেমনি ভাবে কিশোর-যুবকেরা নৈতিক অবক্ষয়ের মাধ্যমে নিজের জীবন ধ্বংসের মুখোমূখী করছে, তেমনি করে দেশকেও তারা পিছিয়ে দিচ্ছে যা করোনা মহামারী হতে কম ভয়ংকর নয়।
এরূপ দূরাবস্থা হতে উত্তরণ বা বেরিয়ে আসার অন্যতম পন্থা হচ্ছে- কিশোর-যুব সমাজের হাতে মোবাইল বিশেষ করে এনড্রয়েড সেট না দেয়া, এমনকি মোবাইল বিক্রেতারা ছেলেদের ক্ষেত্রে অনুর্ধ ২১ আর মেয়েদের ক্ষেত্রে অনুর্ধ ১৮ এর নিচের বয়সের, বিশেষ করে শিক্ষার্থী (ছাত্র-ছাত্রীদের) নিকট স্মার্ট ফোন বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে। ঐ বয়সের উপরের শিক্ষার্থী এবং যুব সমাজের প্রতিও দৃষ্টি দিতে হবে।
সন্ধ্যর পর শিক্ষার্থীরা এবং কর্মমূখী যুবকরা বাহিরে ঘুরাফেরা করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের জিজ্ঞাসার আওতায় আনা একাস্ত প্রয়োজন।
সর্বপোরি ধর্মীয় অনুশাসন তথা নৈতিক গুনাবলীর আওতায় সকল স্তরের শিক্ষার্থীকে কর্মমূখী শিক্ষা দেয়া আবশ্যক বলে মনে করি। তাহলেই আমাদের যুব সমাজ নক্ষত্রের ভূমিকা রেখে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। ইনশা আল্লাহ।
পরিশেষে বলছি যে, আমাদের সন্তান ও সম্পদ আল্লাহর দেয়া আমানত। এদের যথাযথ ব্যবহার না করলে আমরা দুনিয়াতে যেমনি ক্ষতিগ্রস্থ হব এবং হচ্ছি, এমনি ভাবে পরকালেও চরম সংকটের সম্মুখীন হতে হবে। এপ্রেক্ষিতে ইংরেজীতে অতীব গুরুত্বপূর্ন একটি প্রবাদ রয়েছে- We hate disuse, misuse and congratulate proper use Allah’s gifts for us.
লেখকঃ কলামিষ্ট ও গবেষক।
Leave a Reply