নকশী বার্তা ডেস্ক : প্রায় সাড়ে ৯ মাসেরও বেশি সময় পর এ মাসেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। এর মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। পূরণ হচ্ছে দীর্ঘ সময়ের আকাঙ্ক্ষা। তবে নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, বিতর্কিত কেউ কেউ কমিটিতে পদ পেতে পারেন।
তারা বলছেন, ক্যাসিনোকাণ্ডসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ঘুরেফিরে যাদের নাম এসেছে বিভিন্ন সময়ে তারাও কমিটিতে স্থান পেতে সরব। এরই মধ্যে নিজেদের ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরতে এবং সংগঠনের শীর্ষনেতাদের কাছে নিজেকে পরিশুদ্ধ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন তারা।
যেসব জেলা, মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, সেই কমিটি ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য সংগঠনের সব শাখার প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার কাজ চলছে।
জুয়াসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে গত বছর নানা সমালোচনার মুখে পড়ে যুবলীগ। শুদ্ধি অভিযানের মধ্যেই ওই বছরের ২৩ নভেম্বর যুবলীগকে পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ধারায় আনতে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যান করে নতুন কমিটি করা হয়। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান মাইনুল হোসেন নিখিল। এরপর প্রায় সাড়ে ৯ মাস চলে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি নতুন নেতৃত্ব।
সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সঙ্গে কথা বলে এবং কার্যালয় ঘুরে জানা গেছে, কমিটি পূর্ণাঙ্গ হওয়ার খবরে প্রতিদিনই কার্যালয়ের জমজমাট অবস্থা। যারা বিতর্কিত বা অভিযোগ রয়েছে তারাও প্রকাশ্যে এসে দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। নেতাকর্মীরা বলছেন, বিতর্কিত অনেকেই কমিটিতে আসতে পারেন। এজন্য তোরা ক্ষোভও প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, এবারের যুবলীগের কমিটিতে বিতর্কিত কেউ আসার সুযোগ নেই। বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর। এজন্য আমরা এই বিষয়ে বিশ্লেষণ এবং খোঁজখবর নিয়ে কমিটিতে নাম দিচ্ছি। পরবর্তীতে আরও নিবিড়ভাবে দলীয় সভাপতি বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত করবেন।
ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে যুবলীগের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। জানা গেছে, অনেকের বিরুদ্ধে তদন্তও করছে দুদক। আছে মামলাও। এমন অনেক মুখই এখন পদপ্রত্যাশী। কমিটি করার ক্ষেত্রে সতর্কভাবে যাচাই-বাছাই করছে সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্ব। কোনোভাবেই যেন বিতর্কিত মুখ কমিটিতে না আসে, সেদিকে দৃষ্টি রেখেছেন তারা। এবারের কমিটিতে সাবেক ছাত্র নেতাদের বড় একটি অংশ পদায়ন হবে। অন্যদিকে যুবলীগের আগের কমিটিতে বিভিন্ন পদে ছিলেন, কিন্তু বয়স ৫০-এর উপরে তারা বাদ পড়বেন। অপেক্ষাকৃত তরুণদের দিয়ে সাজানো হচ্ছে যুবলীগের কমিটি।
যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, যুবলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের অবশ্যই নেত্রীর বার্তা বোঝার কথা। আমি মনে করি, তারা সেভাবেই খোঁজখবর নিয়ে সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিবেচনায় নিয়ে পদ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। অসাংগঠনিক, অরাজনৈতিক এবং বিতর্ক আছে, এমন কাউকে কমিটিতে পদায়ন করবে না। কারণ দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।
Leave a Reply