1. [email protected] : Touhidul islam Robin : Touhidul islam Robin
  2. [email protected] : Mozammel Alam : Mozammel Alam
  3. [email protected] : nakshibarta24 :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লাগামী তিসা বাসে দরজা-জানালা বন্ধ করে তরুণীকে গণধর্ষণ

  • প্রকাশকালঃ শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৭৭৬ জন পড়েছেন

কুমিল্লা প্রতিনিধি :  ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী তিশা প্লাস নামে একটি যাত্রীবাহী বাসে দরজা-জানালা বন্ধ করে এক তরুণীকে আটকে রেখে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় বাসের চালক আরিফ হোসেন সোহেল (২৬) ও হেলপার বাবু শেখকে (২২) গ্রেফতার করা হয়েছে। আর সুপারভাইজার (৩২) আলম পলাতক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত বাসচালক আরিফ হোসেন সোহেল কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার নেউরা গ্রামের শরীফ হোসেনের ছেলে ও হেলপার বাবু শেখ ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কামিনারবাগ গ্রামের শেখ ওয়াজেদের ছেলে। তারা দুজনই সদর দক্ষিণ থানার নোয়াবাড়ি (পদুয়ার বাজার) ও মধ্যম আশ্রাফপুর এলাকায় বসবাস করেন। বৃহস্পতিবার আদালতে উভয়ের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্যাতিত তরুণীর চিকিৎসা, ডাক্তারী পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দি প্রদানের পর বুধবার রাতে তার মায়ের হেফাজতে দেয়া হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অভিযুক্ত অপর ধর্ষক বাসের সুপারভাইজার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আটচাইল গ্রামের কবির মিয়ার ছেলে আলমকে (৩২) গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ, মামলার বিবরণ ও ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণী (১৬) কিছুদিন আগে ঢাকার আবদুল্লাহপুরে তার জেঠাতো বোনের বাসায় যান। বাড়ি ফেরার উদ্দেশে গত সোমবার বিকেলে জেঠাতো বোনের বাসা থেকে বের হন এবং আবদুল্লাহপুর থেকে লোকাল বাসযোগে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে পৌঁছান। ওইদিন রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে তিশা প্লাস পরিবহনের একটি বাসে কুমিল্লা শহরের শাসনগাছার উদ্দেশে রওনা করেন।

পথিমধ্যে ওই তরুণী বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানালে তারা নামিয়ে দেবেন এবং এ বিষয়ে টেনশন করতে নিষেধ করেন। কিন্তু ওই বাসের চালকসহ অন্যারা তরুণীকে নগরীর শাসনগাছা না নামিয়ে অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়ার পর কৌশলে বাসটি জেলা সদরের অদূরে সদর দক্ষিণ থানাধীন পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের আল-শাকিল হোটেলের সামনে নিয়ে যায়।

সেখানে মঙ্গলবার ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়ে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে বাসের হেলপার বাবু শেখ (২২), চালক আরিফ হোসেন সোহেল (২৬) ও সুপারভাইজার আলম (৩২) তাকে গণধর্ষণ করে। চালক আরিফ হোসেন সোহেল বাস থেকে নেমে গেলে ওই তরুণীকে পদুয়ার বাজার এলাকায় হেলপার বাবু শেখের বসতঘরে নিয়ে হেলপার ও সুপারভাইজার আলম পুনরায় ধর্ষণ করে। পরে সকাল ৬টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় ঘর থেকে বের করে দিয়ে চলে যেতে বলে।

এ ঘটনার পর ভোর গড়িয়ে দুপুর। ওই তরুণী মোবাইলফোনে বিষয়টি তার মাকে জানালে মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে তার মা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় পৌঁছে ঘটনার বিস্তারিত জানেন এবং ধর্ষকদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করেন। এ বিষয়ে ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে ওইদিন রাতে তিন ধর্ষকের বিরুদ্ধে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় গণধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।

গণধর্ষণের শিকার ওই তরুণী সেই রাতের ভয়াবহ বর্ণনা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোর তখন আনুমানিক ৪টা। রাস্তায় লোকজন খুব কম। গাড়ি থেকে অন্য সব যাত্রী নেমে পড়েছেন। হঠাৎ গাড়ির দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় ভেতরের প্রায় সব লাইট। এরপর পালাক্রমে গাড়ির ভেতরই ওরা আমার ইজ্জত লুটে নেয়। তখনই তাদের আমি ধর্মের বাবা ও ভাই ডেকেই রক্ষা পাইনি।’

ধর্ষিতার মা জানান, তার মেয়ে গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসে চাকরি করত। করোনার কারণে পাঁচ মাস আগে বাড়ি চলে আসে। গত শুক্রবার চাকরির সন্ধানে বাড়ি থেকে ঢাকায় গিয়ে জেঠাতো বোনের বাসায় ওঠে। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনার শিকার হয়। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুইদিন চিকিৎসার পর বুধবার রাতে তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। তিনি তার মেয়ের ওপর নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

এদিকে তিশা প্লাস পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ওই গাড়ির মালিক দুলাল হোসেন অপু বলেন, ঘটনার পর আমরা তিশা প্লাস গাড়ির (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৩৯৮) চালক ও হেলপারসহ দুই আসামিকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কমলকৃষ্ণ ধর বৃহস্পতিবার রাতে জানান, মামলার পর পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে চালক বাবু শেখ ও হেলপার আরিফ হোসেন সোহেলকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো করা হয়।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার আদালতে উভয়ের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া ওই তরুণীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে এবং সে আদালতে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার অপর আসামি আলমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

খবরটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

বিজ্ঞাপন

Laksam Online Shop

first online shop in Laksam

© All rights reserved ©nakshibarta24.com
কারিগরি সহায়তায় বিডি আইটি হোম