1. [email protected] : Touhidul islam Robin : Touhidul islam Robin
  2. [email protected] : Mozammel Alam : Mozammel Alam
  3. [email protected] : nakshibarta24 :
সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ১১:২০ পূর্বাহ্ন
৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হারিয়ে যাচ্ছে তালপাতার পাখা

  • প্রকাশকালঃ শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২০
  • ২৮০ জন পড়েছেন
রাব্বি হাসান :

উঠোন জুড়ে পচা পাটের ঘ্রাণ। খোলা আকাশের নিচে তালপাতার পাখা আর হোগলা পাতার মাদুর তৈরির দৃশ্য হরহামেশাই গ্রামে-গঞ্জে দেখা যেত। প্রচন্ড গরমে স্ত্রী তার স্বামীকে তাল পাতার পাখা দিয়ে বাতাস দেওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হওয়া ছিল চিরচেনা এক দৃশ্য। কিন্তু কালের বিবর্তনে সভ্যতার নতুন দিগন্তে তালপাতার পাখা আজ বিলুপ্তির পথে।

তালপাতা পাখার কদর সবচেয়ে বেশি দেখা যেত বিশ শতকের আগে। গ্রামের হাটবাজারে, নবর্বষের মেলায় প্রতিটি দোকানে তখন থরে থরে সাজানো থাকতো তালপাতার পাখা। অনেকেই তখন হাত পাখা কিনে মেলা থেকে হাটতে হাটতে বাড়ি ফিরত। তখনো এতোটা আধুনিকতার ছোয়া লাগেনি গ্রামগঞ্জে। ইলেক্ট্রিসিটির আগমন হয়নি সর্বত্র। বাড়িতে মেহমান আসলে আজকের মতো সুইচ টিপে এয়ারকন্ডিশন ছেড়ে দেয়ারও সুযোগ ছিলনা। গ্রামেগঞ্জে তখন তালপাতার পাখাই ছিল শীর্ষে।

আবদুল মান্নান, বয়স ৭০ ছুঁই ছুঁই। পেশায় হস্তশিল্পি। একসময় তালপাতার পাখা বেঁচে সংসার চলত তার। কিন্তু এখন পাখার ব্যবহার কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়েছেন পেশা বদলাতে।

তালপাতার পাখা বিক্রির দিনগুলোর কথা স্মরণ করে মান্নান বলেন, ‘আমার বাপ ছিল গরিব, ছোট থেকে আমি বাপের সাথে তালপাতা দিয়ে বিছুন (পাখা) বানাইতাম। তারপর গঞ্জের হাঁটে নিয়া, মেলায় নিয়া বেঁচতাম। অনেক মানুষ কিনত তহন এই বিছুন। বিছুনের বাতাস ঠাণ্ডা লাগে, মজাও লাগে। বেঁচা হইত অনেক। আস্তে আস্তে আমগো সংসারটা খাড়াইয়া (অভাব-অনাটনে ভরে ওঠে) যায়। কারেন্ট আইবার পর আর বিছুন বেঁচতে পারিনা আগের মতন। পরে এই কাম ছাইড়া দেই। এহন অন্য কাম করি।’

সত্তরোর্ধ বয়সের ফজিলাতুন্নেছা তার পুরোনো দিনের কথা স্মরণ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্রতিবেদকে বলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম তখন তালপাতার পাখা দিয়ে বাবাকে বাতাস করতাম। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে গিয়ে তাকেও বাতাস করতে হয়েছে। শ্বশুর-শাশুড়িসহ অন্যদেরও তখন বাতাস দিতাম মাঝে মাঝে। এখন আর আগের মতো বাতাস করার সময় নেই। ফ্যানের সুইচ চাপলেই হয়।’

ইলেক্ট্রনিকের যুগে এসে তালপাতা পাখা বিলুপ্তির পথে হলেও তালপাতার যুগের কথা স্মরণ রাখবে আরো কয়েক প্রজন্ম। বাংলার গ্রাম-গঞ্জের মানুষের কাছে চিরচেনা তালপাতার পাখা। এখন ব্যবহার তুলনামূলক কম হলেও এর ঐতিহ্য হাজার বছরের। আধুনিকতার সাথে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠতে না পারলেও মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে এ পাখা। যা বৈদ্যুতিক পাখা কিংবা এয়ারকন্ডিশনে যুগের আগেকার অনেকের ভালোবাসা ও আস্থার নাম।

লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ

খবরটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

বিজ্ঞাপন

Laksam Online Shop

first online shop in Laksam

© All rights reserved ©nakshibarta24.com
কারিগরি সহায়তায় বিডি আইটি হোম